কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি-সদস্যদের সম্মানী বন্ধ, শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর
Published: 13th, March 2025 GMT
সারা দেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজগুলো থেকে পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডির সদস্যরা কোনো আর্থিক সুবিধা বা সম্মানী নিতে পারবেন না। সেই সঙ্গে এসব কলেজের গভর্নিং বডি ও অ্যাডহক বা অস্থায়ী কমিটির সভাপতি বা বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এ-সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই দিন থেকে এসব নির্দেশনা কার্যকর বলে জানানো হয়েছে দুটি প্রজ্ঞাপনে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, একজন ব্যক্তি দুটির বেশি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি বা বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে মনোনীত হতে পারবেন না। গত ১৮ নভেম্বর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি কলেজের অ্যাডহক বা অস্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়নে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নির্ধারণ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনার আলোকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর গভর্নিং বডির সভাপতি বা বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশিদের জন্য যুক্তরাজ্যর গ্রেট স্কলারশিপ, প্রতিটি বৃত্তি ১০ হাজার পাউন্ডের ৪ ঘণ্টা আগেপ্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দুটির বেশি কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বা বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনীত হতে পারবেন না।
আরও পড়ুনদেশের আরও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি হলো১১ মার্চ ২০২৫অপর এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গভর্নিং বডি (সংশোধিত) সংবিধি-২০১৯ অনুযায়ী, গভর্নিং বডি বা অ্যাডহক কমিটির সভাপতিসহ সব সদস্যের পদ সম্মানীয় অবৈতনিক পদ। সমাজের সম্মানীয় ব্যক্তিদের অর্জনগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে তাঁদের গভর্নিং বডি ও অ্যাডহক কমিটির সভাপতি বা বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়ে থাকে। কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে গভর্নিং বডি বা অ্যাডহক কমিটির সভাপতিসহ সদস্যরা যেসব দায়িত্ব পালন করেন, সেসব মূলত স্বেচ্ছাসেবী বা সেবামূলক কাজ। অবৈতনিক, স্বেচ্ছাসেবী বা সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা বাবদ গভর্নিং বডি, অ্যাডহক কমিটির সভাপতিসহ সব সদস্যকে সিটিং অ্যালাউন্স, সম্মানী বা কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হলো। এর ব্যত্যয় হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট গভর্নিং বডি বা অ্যাডহক কমিটি বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনআইইএলটিএস প্রস্তুতি, ইংরেজির স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য প্রতিদিন করণীয়২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বয়সীর সুযোগ, ভাতা দৈনিক ২০০০৬ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র গভর ন কল জ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।