মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

বুধবার (১২ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়‌টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানিয়েছেন, ওই তিন ব্যাংকে সাত জন করে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করতে ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করতে পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করেছে।   

এর মধ্যে এনআরবি ব্যাংকের নতুন গঠিত পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে উদ্যোক্তা শেয়ারধারক ইকবাল আহমেদ ওবিই পরিচালক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো.

সেলিম, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মতিউর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফিন্যান্স বিভাগের  অধ্যাপক শরীফ নূরুল আহকাম (বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মিজানুর রহমান।

এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়াকে স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান করা হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আবুল বশর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংক সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. শফিকুর রহমান, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ (বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ।

মেঘনা ব্যাংকে দুই জনকে পরিচালক করা হয়েছে। তারা হলেন—উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার উজমা চৌধুরী এবং তানভীর আহমেদ (ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন লিমিটেডের পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক)। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. মামুনুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. রজব আলী, যমুনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম (বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত), প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মো. আলি আকতার রিজভী।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন আটটিসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার তিনটি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ঢাকা/এনএফ/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

পাসওয়ার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে একজনের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা টাকা আরেকজন তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে সঞ্চয়পত্র খাতে। তাই সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের আরও সতর্ক থাকার বিষয়টি সামনে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে গত ২৩ অক্টোবর ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেন এক ব্যক্তি। তাঁর ব্যাংক হিসাব অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেসক্লাব শাখায়। ২৭ অক্টোবর এই সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয় এবং টাকা নেওয়া হয় এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার অন্য এক ব্যক্তির হিসাবে। ওই টাকা জমা হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে ব্যাংকটির রাজধানীর শ্যামলী শাখা থেকে তুলে নেওয়া হয়।

একই প্রক্রিয়ায় একই দিনে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ ও এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলে তা আটকে দেওয়া হয়।

কথা হচ্ছে সঞ্চয়পত্র কেনার পরই আপনার দায়িত্ব শেষ হয়ে গেল? উত্তর হচ্ছে ‘না’। সঞ্চয়পত্র কিনলেন মানে আপনি বিনিয়োগ করলেন। বিনিয়োগ যেহেতু করলেন, তা সুরক্ষিত ও ঝামেলামুক্ত রাখার দায়িত্বও আপনার ওপর বর্তায়। এ জন্য কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। কী করতে হবে, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো।

১. নথিপত্র যত্নে রাখুন

সঞ্চয়পত্র কেনার পর ব্যাংক বা সঞ্চয় অফিস থেকে যে মূল নথি বা ডকুমেন্ট দেওয়া হয়, এতে একটি কিউআর কোড থাকে। কিউআর কোড আছে কি না, তা দেখতে হবে। এ নথি যত্নসহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ, যেকোনো প্রয়োজনে তা লাগবে। সম্প্রতি সঞ্চয়পত্রের অর্থ চুরির মতো ঘটনা ঘটলে ওই সব নথি প্রয়োজন হবে।

২. ব্যাংক হিসাব সক্রিয় রাখুন

সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল টাকা ব্যাংক হিসাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হয়। তাই নিশ্চিত করুন যে আপনার দেওয়া ব্যাংক হিসাবটি সব সময় সক্রিয় আছে। যদি ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করে তা আবার চালু করুন। না হলে মুনাফার টাকা পেতে ভোগান্তি বাড়বে। এমনকি আসল টাকা পেতেও ভোগান্তি হতে পারে। কোনো কারণে ব্যাংক হিসাব বদলাতে হলে আবেদন করে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নতুন হিসাব করতে হবে।

৩. মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তন

বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত মুঠোফোন নম্বর বা ব্যাংক হিসাব নম্বর তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কোনো কারণে মুঠোফোন নম্বর বদলাতে হলেও আবেদন করে জানাতে হবে সঞ্চয় অধিদপ্তরকে। মুঠোফোনেই সঞ্চয়পত্র যে হিসাবে আছে, সেই হিসাবের লেনদেনের বার্তা আসে।

৪. প্রতারণা এড়ানো

যেকোনো তথ্য পরিবর্তন, সুদ বা আসল টাকা তোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই যে অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, সেখানেই আবেদন করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার মুঠোফোন নম্বরে আসা কোনো ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) বা গোপন তথ্য কাউকে জানাবেন না। যতটা পারা যায় গোপন রাখতে হবে। পাসওয়ার্ড জালিয়াতি করেই সম্প্রতি অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে।

৫. নমিনির তথ্য সঠিক হতে হবে

নিশ্চিত করুন যে নমিনির নাম ও অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে নথিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রাহক মারা গেলে নমিনি যাতে সহজেই সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করতে পারে বা মুনাফা উত্তোলন করতে পারে, সে জন্য সঠিক তথ্য থাকা জরুরি।

৬. মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়ন

জরুরি প্রয়োজনে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো বা নগদায়ন করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে মুনাফার হার কিছুটা কম হতে পারে বা জরিমানা কাটা হতে পারে। এ বিষয়ে নিয়মকানুন জেনে রাখা গ্রাহকেরই দায়িত্ব। না জানা থাকলে অফিসে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়বেন এবং প্রত্যাশা অনুসারে কম টাকা পেলে হতাশা হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন