তিন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন
Published: 13th, March 2025 GMT
মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (১২ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ওই তিন ব্যাংকে সাত জন করে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করতে ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করতে পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করেছে।
এর মধ্যে এনআরবি ব্যাংকের নতুন গঠিত পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে উদ্যোক্তা শেয়ারধারক ইকবাল আহমেদ ওবিই পরিচালক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো.
এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়াকে স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান করা হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আবুল বশর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংক সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. শফিকুর রহমান, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ (বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ।
মেঘনা ব্যাংকে দুই জনকে পরিচালক করা হয়েছে। তারা হলেন—উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার উজমা চৌধুরী এবং তানভীর আহমেদ (ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন লিমিটেডের পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক)। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. মামুনুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. রজব আলী, যমুনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম (বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত), প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মো. আলি আকতার রিজভী।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন আটটিসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার তিনটি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ঢাকা/এনএফ/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।