স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, এসি মামুনের অপসারণ দাবি ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের
Published: 13th, March 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ‘ব্যর্থ’ চিহ্নিত করে তাঁর পদত্যাগ, পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুনকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের শিক্ষার্থীরা।
হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ধর্ষক-নিপীড়কদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের শিক্ষার্থীরা।
‘ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ৯ দফা দাবিতে গণপদযাত্রা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিতে পুলিশি হামলা, আন্দোলনের সংগঠকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অন্যায্য মামলা এবং হামলার পর সংঘবদ্ধ অপপ্রচারকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের বক্তব্য’ শিরোনামে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী স্কাইয়া ইসলাম লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এতে অভিযোগ করা হয়, গত মঙ্গলবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে ৯ দফা দাবিতে পদযাত্রা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ প্রথমে হামলা করেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করা হয়, ‘মঙ্গলবার ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নবিরোধী মিছিল আটকানোর জন্য ডিএমপি প্রথমে কোনো নারী পুলিশ রাখেনি, পুরুষ পুলিশরা নারী শিক্ষার্থীদের ওপর খুবই নৃশংস কায়দায় হামলা করেছে। এ হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে নারীদের ওপর এসি মামুনের ন্যক্কারজনক হামলা আবারও পুলিশের গণবিরোধী চরিত্রের উন্মোচন ঘটাল। আন্দোলনকারীরা আত্মরক্ষার্থে পুলিশকে মোকাবিলা করেছে এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্যও এতে আহত হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি, যা অপ্রত্যাশিত।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই হামলার দায় পুলিশ-প্রশাসনসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিতে হবে। এই হামলা চলমান আন্দোলনের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবির যথার্থতা প্রমাণ করে। এই নৃশংস পুলিশি হামলার পর ন্যায্য আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে একদল মানুষ সংঘবদ্ধভাবে উসকানিমূলক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। বিভিন্ন ছবি ও খণ্ডিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে এই হামলাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই মিথ্যা ও খণ্ডিত অপপ্রচারে অনেকে বিভ্রান্তও হয়েছেন।
মঙ্গলবারের ঘটনায় গতকাল বুধবার রমনা থানায় একজন সাংবাদিকসহ আন্দোলনকারী ১২ শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনের নামে ‘মিথ্যা মামলা’ করা হয়েছে উল্লেখ করে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বলেছে, ‘অবাক হতে হয়, যখন দেখি সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন না, এমন কয়েকজনের নামেও মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে গণহারে এই মামলা করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার, জোহরা নাজিফা, অর্থি আনজুম, ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তিলোত্তমা ইতি, সুমাইয়া আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অনেকে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নারী শিক্ষার্থীরা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিলোত্তমা বলেন, ‘আমাদের শাহবাগী বা ফ্যাসিবাদের দোসর বলে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। অথচ আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। ফ্যাসিস্টের দোসর হলে তো আমরা জুলাই আন্দোলনে অংশ নিতাম না, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতাম না। ট্যাগিংয়ের রাজনীতি বন্ধ না হলে জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে।’
মামলা-হামলাকে ‘ডাইভার্ট’ করতে মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে এক প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করেন সুমাইয়া আক্তার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হয় ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫