অফিসের স্টোররুমে বড় অঙ্কের টাকা পান নিম্নপদস্থ কর্মচারী ...
Published: 14th, March 2025 GMT
সব সময়ই নিজের কাজ আর অভিনয় দিয়ে চমকে দেন গুণী অভিনেত্রী জয়া আহসান। কখনো বাংলাদেশ, কখনো ভারতে—জয়ার কীর্তি সর্বত্র। দিনে দিনে নিজেকেও ছাপিয়ে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকটায় টেলিভিশন নাটকের ভীষণ জনপ্রিয় মুখ ছিলেন জয়া। তবে তিনি যে অভিনয়ে কতটা পারদর্শী, সেই নজির স্থাপন করেছেন বড় পর্দায়। এবার সেই জয়াকে অন্যরূপে দেখতে চলেছেন তাঁর ভক্তরা।
ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। তাঁর নতুন সিরিজটির নাম ‘জিম্মি’। পবিত্র ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে নির্মাতা আশফাক নিপুন পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘জিম্মি’। ২৮ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পাবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে হইচই। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুখ্য চরিত্রে এটিই জয়া আহসানের প্রথম কোনো ওয়েব সিরিজ।
আরও পড়ুনআশফাক নিপুনের ‘জিম্মি’তে জয়া, আসছে ঈদে৯ ঘণ্টা আগে‘জিম্মি’ সিরিজে কেন অভিনয় করেছেন—এমন প্রশ্নে জয়া আহসান বলেন, ‘আমি নতুন কোনো কাজ করার আগে তিনটা বিষয় সব সময় খেয়াল করি, সেটা হলো গল্প, চরিত্র ও পরিচালক। “জিম্মি”র ক্ষেত্রে এগুলো সব মনমতো মিলে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে আমার ওয়েব সিরিজের শুরুটা করছি হইচই-এর সাথে, মুক্তি পাবে ঈদে—সব মিলিয়ে আমার জন্য বিষয়টা বেশ রোমাঞ্চের।’
‘মহানগর’ নির্মাণ করে দর্শকমহলে পরিচিতি পেয়েছেন আশফাক নিপুন। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘জিম্মি’ বিষয়ে আশফাক নিপুণ বলেন, ‘আমি জিম্মি নির্মাণের মাধ্যমে নতুন রকমের গল্প বলার চেষ্টা করেছি। এই সিরিজে সামাজিক বাস্তবতা, মানবিক অনুভূতি ও বিনোদনের মেলবন্ধন রয়েছে। এইটুকু বলতে পারি, দর্শক অবশ্যই নতুন কিছু উপভোগ করবে।’
জয়া আহসানের সঙ্গে প্রথম কাজ, সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জানতে চাইলে নিপুন বলেন, ‘জয়া আহসান দারুণ ও পরীক্ষিত একজন অভিনেত্রী। গল্পের প্রয়োজনে আমরা এমন একজন অভিনয়শিল্পী চেয়েছিলাম, যার অভিব্যক্তি ও অভিনয়গুণে চরিত্রটি জীবন্ত হয়ে উঠবে। তিনি আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।’
‘জিম্মি’ সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেনকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ হুমকি দেন তিনি।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আনোয়ার হোসেন।
ফেসবুক পোস্টে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের দুটি ছবি লাল দাগ দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেন মোত্তাসিন। ক্যাপশনে তিনি আনোয়ার হোসেনের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘....সত্য লিখুন, না হলে আপনিও ছাড় পাবেন না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’
মোত্তাসিন বিশ্বাসের পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে আনোয়ার হোসেনকে একাধিক আইডি থেকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ বুধবার বেলা ৩টা ১৬ মিনিটে মোত্তাসিনের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি তাঁর ওয়ালে আবার দেখা যায়। এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ’।
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোত্তাসিন বিশ্বাস আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক পোস্টে হলুদ কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। এটি গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ নিয়ে প্রথম আলোয় ‘পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ খবরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েই এমন পোস্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন মোত্তাসিন।
তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলেছিলেন, পরে মুছে দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের করা কোন সংবাদটির বিষয়ে পোস্ট করেছেন, জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাকে বাধা দেওয়ার সংবাদটির কথা জানান।
মোত্তাসিন বিশ্বাস আরও বলেন, প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন চব্বিশের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু সংবাদটি এভাবে কেন লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়ে গেছেন। সে জন্যই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন।
আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেছেন, স্ট্যাটাসে তাঁর দুটি ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পোস্টে মোত্তাসিনের অনুসারীসহ আরও অনেকে খারাপ মন্তব্য করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জিডি করার কথা জানান তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এটি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, এই পোস্ট দেওয়ার পর রাতে তাঁরা এটি নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোস্টটি ডিলিট করা হবে।
আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫সাংবাদিক সমাজের নিন্দা-প্রতিবাদআনোয়ার হোসেনকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জরুরি সভা করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সভায়। অবহিত করার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাবতীয় সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিজেএ) সভাপতি রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিটিজেএর নেতা ও সদস্যরা।
সভার পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশে একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে আপত্তিজনক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব অধিকারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বাক্স্বাধীনতার অধিকার। একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে ফেসবুকে এমন পোস্ট সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপ, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করেছে।’ অবিলম্বে মোত্তাসিন বিশ্বাস তাঁর দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ না করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।