গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানো সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ রিমান্ডে
Published: 16th, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পুলিশের অভিযানের সময় গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়েছিল সে। রোববার চট্টগ্রাম আদালতে তোলার পর তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান বিচারক।
সাজ্জাদ হোসেন হাটহাজারীর শিকারপুর গ্রামের সোনা মিয়া সওদাগর বাড়ির মো.
এদিকে গ্রেপ্তারের পর ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে হুমকি দিয়েছেন সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না। ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘যারা এ ঘটনা ঘটাইছে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলে স্বামীকে বীরের বেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’ ‘স্বামী ফিরে এলে খেলা হবে’ বলে প্রতিপক্ষকে হুঁশিয়ারিও দেন।
সাজ্জাদকে চট্টগ্রামে নেওয়ার পর সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। এ সময় সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সদরদপ্তরের সঙ্গে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করছিল। পাশাপাশি তাকে ধরতে চট্টগ্রাম পুলিশের একটি দল কয়েক দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিল। পুলিশ সদরদপ্তরের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে সাজ্জাদকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত আগস্টে চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকায় জোড়া খুন এবং পরবর্তী সময়ে চান্দগাঁও এলাকায় প্রকাশ্যে একজনকে গুলি করে হত্যায় সরাসরি জড়িত ছোট সাজ্জাদ। পাশাপাশি প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি, গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ কার্যক্রম করে আসছিল সে। বিদেশে পালিয়ে থাকা নগরীর অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে সে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, ছোট সাজ্জাদ দুর্ধর্ষ প্রকৃতির সন্ত্রাসী। সর্বশেষ তাকে গ্রেপ্তারে অভিযানের সময় গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সে। ওই সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।
কে এই ছোট সাজ্জাদ
চট্টগ্রামের একসময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদ। আলোচিত এইট মার্ডার মামলার দণ্ডিত এ আসামি ২০০০ সালে একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হয়। তবে ২০০৪ সালে জামিনে বেরিয়ে বিদেশে পালিয়ে যায়। তবে নগরের বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারী এলাকায় এখনও কেউ নতুন বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, জমি বেচাকেনা করলেই চাঁদা দাবি করে ফোন আসে সাজ্জাদের। টাকা দিতে গড়িমসি করলে শিষ্যদের দিয়ে চালানো হয় হামলা। দুই দশকের বেশি এভাবেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখেছে সাজ্জাদ। এর মধ্যে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নুরুন্নবী ম্যাক্সন ভারতে মারা গেছে। একাধিকবার গ্রেপ্তারের পর দলছুট ঢাকাইয়া আকবর। আর সারোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা পক্ষ ত্যাগ করে বাহিনী গড়েছে। এর পর ছোট সাজ্জাদকে শিষ্য হিসেবে গড়ে তোলে বড় সাজ্জাদ।
বর্তমানে নগরের অক্সিজেন-কুয়াইশ এলাকার আধিপত্য নিয়ে লড়াই চলছে ছোট সাজ্জাদ ও বাবলার মধ্যে। এরই জেরে গত বছরের ২৯ আগস্ট রাতে কুয়াইশ-অক্সিজেন সড়কে মো. আনিস ও মাসুদ কায়ছার নামে দু’জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক মামলাতেই আসামি সাজ্জাদ। একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর কালারপুল এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে প্রকাশ্যে গুলি চালায় সাজ্জাদ। গত ২১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়া এলাকায় মাইক্রোবাসে এসে প্রকাশ্যে গুলি করে আফতাব উদ্দিন তাহসীন নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করে সাজ্জাদ ফের আলোচনায় আসে। এর পর গত ৫ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজন আহত হন। গত ২৮ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে গ্রেপ্তার চেষ্টা চালানোয় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে প্রকাশ্য পেটানোর হুমকিও দেন। এর পর ৩০ জানুয়ারি তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে সিএমপি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর এল ক য় স এমপ নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//