প্রায় এক একর জমিতে আলু চাষ করেছেন কাজল মিয়া। খেত থেকে বেশির ভাগ আলু উত্তোলনও করেছেন। কিন্তু হিমাগারে আলুর রাখার বুকিং দিতে পারেননি। রংপুর নগরের তালুক উপাসু গ্রামের এই কৃষকের দাবি, হিমাগারগুলোতে ক্ষুদ্র চাষিরা আলু রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না।

কাজল মিয়া প্রথম আলোকে বললেন, জমির ইজারা ও বীজ আলুর দাম বেশি হওয়ায় আলু উৎপাদনে প্রতি কেজিতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২০ টাকা। এখন আলুর দাম ১৩ থেকে ১৪ টাকা। এ অবস্থায় আলু বিক্রি করলে লোকসানে পড়বেন। হিমাগারেও রাখতে পারছেন না। এখন আলু নিয়ে উভয়সংকটে পড়েছেন তিনি।

শুধু কাজল মিয়া নন, হিমাগারে আলু রাখা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন রংপুরের হাজারো কৃষক। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, একসময় মুন্সিগঞ্জ আলু উৎপাদনে শীর্ষ জেলা থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রংপুরে সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে। দেশের মোট আলুর ১৫ শতাংশ উৎপাদন হচ্ছে রংপুরে। চলতি বছর রংপুরে যে পরিমাণ আলুর আবাদ হয়েছে, তার ৭৮ শতাংশ আলু রাখার হিমাগার নেই।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রংপুরে ৫৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৩১৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়, যা সারা দেশের জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৩ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয় ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৫৭৬ মেট্রিক টন। এবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ৯৫০ হেক্টরে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৬৬ হাজার ২৮০ হেক্টরে। সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন।

আরও পড়ুনহিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ০১ মার্চ ২০২৫

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রংপুরে আলুচাষি সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ জন।
রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা শাকিল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, একটি সরকারিসহ জেলায় ৪০টি আলুর হিমাগার আছে। এসব হিমাগারে ৪ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন আলু রাখার সুযোগ আছে। এর বাইরে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে ১২১টি অহিমায়িত আলুর মডেল ঘর করা হয়েছে। এসব অহিমায়িত ঘরে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করা যাবে। তাঁর দাবি, সব মিলিয়ে ৩০ শতাংশ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যাবে।

হিমাগারে আলু রাখতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ১২ মার্চ রংপুর নগরের বিনোদপুর এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ট র ক টন

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ৩২১ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের প্রায় সমান। গত অর্থবছরে (২০২৩–২৪) মোট ৩৩৭ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মানে হলো, এবার প্রথম ৯ মাসেই গত অর্থবছরের কাছাকাছি ঋণ পরিশোধ হয়ে গেছে।

আজ বুধবার বিকেলে প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তৈরি জুলাই–মার্চ মাসের বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। সেখানে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধের এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ইআরডির তথ্য অনুসারে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) দেশে মোট প্রায় ৪৮১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে। এ সময়ে ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়েছে অর্থছাড়ের প্রায় দুই–তৃতীয়াংশের সমান।

অন্যদিকে আলোচ্য ৯ মাসে বিদেশি ঋণ বাবদ পরিশোধের মধ্যে আসলের পরিমাণ ২০১ কোটি ডলার। আর সুদ বাবদ ১২০ কোটি ডলার পরিশোধ হয়েছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২৫৭ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে ৬৪ কোটি ডলার বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে।

এদিকে গত জুলাই–মার্চ সময়ে ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গতবারের একই সময়ে পাওয়া প্রতিশ্রুতির অর্ধেকের কম। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৭২৪ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।

জুলাই–মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি ১২২ কোটি ডলার ছাড় করেছে এডিবি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ১০৭ কোটি ডলার ও জাপান ৮৯ কোটি ডলার দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
  • ৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
  • শিক্ষার মানোন্নয়নে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন
  • ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
  • যমুনা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ