বাটিকের টাই, জামদানির পকেট স্কয়ার, ঈদের চাঁদের কানের দুল, কাঠের লুডু, নানা নকশার শাড়িসহ কত কী! দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিজস্ব নকশার এক বড় আয়োজন হাল ফ্যাশন ঈদ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে এসব বৈচিত্র্যময় পণ্য।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার দেখে অফিস শেষ করে মেলায় এসেছেন কুমকুম হাসান। ঈদে উপহার দেওয়ার জন্য তার এক বড়সড় তালিকা আছে। তাই কিছু দেশীয় গয়না কেনাই উদ্দেশ্য। এর বাইরে নিজের জন্যও পছন্দ হলে কিছু নিয়ে নেবেন বলে জানান।

দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিজস্বতা ও বৈচিত্র৵ময় পণ্যগুলো এক ছাতার নিচে এনে শুরু হয়েছে হাল ফ্যাশন ঈদমেলা। নানা ঢঙের পোশাক, গয়না, ব্যাগসহ হরেক রকমের পণ্য রয়েছে এ মেলায়।

গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এ মেলা উদ্বোধন করা হয়।

ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ওয়েব পোর্টাল হাল ফ্যাশন প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ঈদমেলা ২০২৫। দেশীয় পণ্যকে এবারের ঈদে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। মেলায় বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি দেশি উদ্যোক্তা।

হাল ফ্যাশন ঈদমেলায় দিয়াশলাই, টিনটিন, সত্যজিৎ থিমের নকশায় আছে পোশাক। এ ছাড়া রিকশা, অটোরিকশার মতো দেশের চিরচেনা ঐতিহ্যও ফুটে উঠেছে এখানে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের নকশায়। জামদানি, মণিপুরি, টাইডাই, বাটিকসহ দেশীয় উপাদানের পণ্যের অনেক বৈচিত্র৵ রয়েছে এখানে।

ওয়েস্টার ক্রাফট মূলত পাট, গামছা ও জামদানির সঙ্গে আর্টিফিশিয়াল চামড়ার ব্যাগ তৈরি করে। তাদের পণ্যও পাওয়া যাবে মেলায়।

ডাই নিয়ে কাজ করেন দুই বোন রাহিমা পারভীন ও শামসুন্নাহার জিমি। তাঁদের উদ্যোগের নাম রঙিন সুতো। তাঁরা জানান, অনলাইনে নানা বৈচিত্রে৵র ক্রেতা থাকেন। তবে মেলায় মজা অন্য রকম। এখানে প্রকৃত ক্রেতা আসেন এবং যাঁরা নতুন আসেন, তাঁরা আবার অনলাইন ক্রেতা হয়ে যান। ক্রেতারা সরাসরি পণ্য দেখে মান বুঝতে পারেন এবং আস্থা পান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা বলেন, দেশের ৫০ বছর পার হলেও বাংলাদেশের ফ্যাশন আসলে এখনো একটি জায়গায় গিয়ে পৌঁছায়নি। একটি সময়ে সেখানে যাবে। উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজের দক্ষতাকে মূল্যায়ন করতে হবে। মনোযোগ জরুরি, মানুষকে কীভাবে দেখতে চাই, তা ভাবতে হবে। সাফল্য বিক্রির ওপর নির্ভর করে না, এটা নির্ভর করে পণ্যটির প্রশংসার ওপর।’

এই মেলায় নানা স্বকীয়তা ও বৈচিত্র৵ দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন চন্দ্র শেখর সাহা।

ফ্যাশন এন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এফইএবি) সভাপতি আজহারুল হক আজাদ বলেন, হাল ফ্যাশন যে এমন করে চিন্তা করছে, তা আগামী দিনে অনন্য জায়গা তৈরি করবে। এখানে সবার কাজই এত সৃজনশীল, ক্রেতাদের কাছে তারা নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে পৌঁছাচ্ছে। তাদের যদি আরেকটু নার্সিং করা যায়, তাহলে বড় হয়ে উঠবে।

হাল ফ্যাশন আয়োজিত ঈদমেলায় আসা ক্রেতারা স্টলে ঘুরে পছন্দের পণ্য দেখছেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নায়িকা হতে আসিনি, তবে...

গুটি, সুড়ঙ্গ, মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন থেকে ওমর—সব সিনেমা-সিরিজেই প্রশংসিত হয়েছে আইমন শিমলার অভিনয়। অল্প সময়ের উপস্থিতিতেও নিজের ছাপ রাখতে পেরেছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। ধূসর চরিত্রেও তিনি সাবলীল, অন্য তরুণ অভিনেত্রীদের থেকে এখানেই আলাদা শিমলা। তবে একটা কিন্তু আছে। এখন পর্যন্ত তাঁর অভিনীত আলোচিত চরিত্রগুলোর সবই চাটগাঁইয়া। শিমলা নিজে চট্টগ্রামের মেয়ে, একটা সময় পর্যন্ত বন্দরনগরীর বাইরে চেনাজানা ছিল সীমিত। এক সিরিজে তাঁর চাটগাঁইয়া ভাষা আলোচিত হওয়ায় পরপর আরও কাজে তাঁকে চাটগাঁইয়া চরিত্রের জন্য ভেবেছেন নির্মাতা।

এ প্রসঙ্গ দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপের শুরু করা গেল। শিমলা জানালেন, এ নিয়ে তাঁর নিজেরও অস্বস্তি আছে। চেষ্টা করছেন ‘চাটগাঁইয়া দুনিয়া’র বাইরে যেতে। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁর নিজের চরিত্র পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ কমই ছিল।

‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুটিংয়ের ঠিক আগে জেনেছি চরিত্রটি সম্পর্কে। তখন তো কিছু করার থাকে না। তবে যেসব কাজ করেছি, সবই আলোচিত পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে; এ অভিজ্ঞতার মূল্যও কম নয়। শিহাব (শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, কাছের মানুষ দূরে থুইয়া, রবিউল আলম রবি ভাইয়ের সঙ্গে ফরগেট মি নট আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া (শহীদুজ্জামান) সেলিম ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলব। সুড়ঙ্গ ও ওমর—দুই সিনেমায় তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন,’ বলছিলেন তিনি।

ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিমের সিনেমা জংলিতেও আছেন শিমলা। এ ছবিতে অবশ্য তাঁর চরিত্রটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে না। সে জন্য সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশি উচ্ছ্বসিত। ‘মুক্তির পর থেকে সিনেমা তো বটেই, আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছি কিন্তু দুঃখের কথা, আমি নিজেই এখনো দেখতে পারিনি। ব্যক্তিগত ঝামেলা, শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। শিগগিরই আমার টিমের সঙ্গে দেখতে চাই,’ বলছিলেন তিনি।

আইমন শিমলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ