চট্টগ্রামে এম্পাওয়ারিং আওয়ার ফাইটারস প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে ইফতার
Published: 20th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের মুরাদপুরে এম্পাওয়ারিং আওয়ার ফাইটারস প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে মিডটাউনের একটি রেস্তরাঁয় এ ইফতার অনুষ্ঠিত হয়।
এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত আরমান এবং আরমানের মা, আহত রাকিবুল, আহত জালাল, আহত সাকিবসহ আরও কয়েকজন আহত বীর।
এছাড়া এম্পাওয়ারিং আওয়ার ফাইটারস এর পক্ষ থেকে কলি কায়েজ, উমামা ফাতেমা, ইদুল ফয়সাল, সাকিবুর রনি, রাকিবুল হোসেন ইসরাফ, আলি হাসনাত, তানজিলাসহ বাকি সদস্যরা। আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ারিয়র অব জুলাই, জুলাই রেকর্ডস সংগঠনটির সদস্যরা।
সামাজিক ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমী, অ্যাডভোকেট ফাহিম শরীফসহ অনেকেই।
অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেছেন কলি কায়েজ এবং সঞ্চালনা করেছেন সংগঠনটির সদস্য ইয়াছিন আরাফাত।
বক্তব্যকালে উমামা ফাতেমা বলেন, ৫ আগস্টের আগের সময়টায় আমরা যখন ভয়ংকর একটি সময় পার করছিলাম, তখন প্রতিদিনের আন্দোলনের পাশাপাশি আহতদের জন্য কাজ করার মানবিক প্রেরণা থেকে আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে আমরা এখন অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। এখন সরকার চাইলে আহতদের জন্য কাজ করা সকল প্ল্যাটফর্মকে একই ছাতার নিচে আনতে পারত।
জুলাই রেকর্ড এর পক্ষ থেকে সুলাইম বলেন, এই আন্দোলনে মানুষ নিঃস্বার্থভাবে প্রাণ দিয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ের প্রশ্নে অনেকেই নানারকম রাজনীতি করছে। এ অবস্থায় আমরা প্রকৃত গল্পগুলো তুলে আনার চেষ্টা করছি।
বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের অবহেলাগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার, যেন দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগকারী মানুষগুলো সুস্থ জীবন যাপনে ফিরে আসতে পারে।
আহত যোদ্ধা সায়েম বলেন, আন্দোলনে আহতদের জন্য কাজ করা সকল প্ল্যাটফর্মকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আহতরা সবাই যেন সুন্দর একটা জীবন পায়, সেই লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করার অনুরোধ জানাই।
অনুষ্ঠানের সভাপতি কলি কায়েজ বলেন, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আহত এবং শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সরকারকে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করতে হবে। প্রত্যেক ভিকটিম পরিবারের জন্য অতি দ্রুত ন্যায়বিচার ও সম্মানজনক পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনটির ঢাকা টিমের সদস্য সাকিবুর রনি বলেন, পুনর্বাসন প্রশ্নে শুধু আর্থিক সাহায্যই মুখ্য না। এখানে প্রত্যেক আহত রোগীর সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থানকে আগের মতো স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রত্যেক আহত ব্যক্তির জন্য বিশেষায়িত পরিকল্পনা নিতে হবে।
এতে আরও বক্তব্য দেন, স্বাস্থ্য উপকমিটির পক্ষ থেকে মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র প ল য টফর ম র জন য ক জ কর অন ষ ঠ সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।
বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।
বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।
এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।
অবরোধকারীদের দাবি
অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।