পাল্টা আক্রমণে নিহত হয় পাকিস্তানিরা
Published: 22nd, March 2025 GMT
শফিকউদ্দিন চৌধুরী চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন যশোর সেক্টর হেডকোয়ার্টারের ৪ নম্বর উইংয়ে। এর সদর দপ্তর ছিল চুয়াডাঙ্গায়। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন প্রতিরোধযুদ্ধে। এ সময় বিষয়খালীতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে শহীদ হন শফিকউদ্দিন চৌধুরী।
ঝিনাইদহ জেলার পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে বিষয়খালী। যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এটি। ২৬ মার্চের পর একদল বীর মুক্তিযোদ্ধা (ইপিআর) অবস্থান নেন বিষয়খালীতে। এই দলে ছিলেন শফিকউদ্দিন চৌধুরী। বিষয়খালীর বেগবতী নদীর অপর পাশে ছিল তাঁদের প্রতিরক্ষা অবস্থান। নদীর ওপরে ছিল সেতু। ১ এপ্রিল (কারও কারও মতে ৩১ মার্চ) যশোর সেনানিবাস থেকে আসা একদল পাকিস্তানি সেনা তাঁদের আক্রমণ করে। এ সময় অভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা ভাত খাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা খাবার রেখে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। তাঁরা আকস্মিক আক্রমণে হকচকিত না হয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মোকাবিলা করতে থাকেন।
শুরু হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। সারা দিন যুদ্ধ চলে। দিনব্যাপী যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর শফিকউদ্দিন চৌধুরীসহ চারজন শহীদ ও কয়েকজন আহত হন। অন্যদিকে অনেক পাকিস্তানি সেনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। বিষয়খালীর যুদ্ধে শফিকউদ্দিন চৌধুরী অসামান্য সাহস ও বীরত্ব দেখান। ২৬ মার্চের পর ওই অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বড় আক্রমণের মুখে এটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সামরিক যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রথম পরাজিত হয়। পরে নতুন আরেক দল পাকিস্তানি সেনা আর্টিলারির সহায়তায় তাঁদের আক্রমণ করে। তখন অব্যাহত গোলাবর্ষণের কারণে তাঁরা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হন।
# শফিকউদ্দিন চৌধুরী, বীর উত্তম
গ্রাম: রণকেলি, গোলাপগঞ্জ, সিলেট। বাবা আবদুল করিম চৌধুরী, মা কামরুননেছা চৌধুরী। স্ত্রী সোনারা বেগম। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। খেতাবের সনদ নম্বর ৪৫। শহীদ ৩১ মার্চ মতান্তরে ১ এপ্রিল ১৯৭১।
সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা। প্রথম খণ্ড। প্রথমা প্রকাশন। (প্রকাশ: মার্চ ২০১২)
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’
আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’
এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।