এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি, তুরস্কে ৩৪৩ বিক্ষোভকারী আটক
Published: 22nd, March 2025 GMT
তুরস্কের সরকার রাজধানী আঙ্কারাসহ বিভিন্ন শহর থেকে শুক্রবার রাতভর ৩৪৩ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আটকের প্রতিবাদে গত বুধবার থেকে তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।
রিপাবলিকান পিপলস পার্টির ইমামোগলুকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে এরদোয়ানের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঘুষ ও একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তার অভিযোগে বুধবার ইমামোগলুকে আটক করা হয়। এর আগে তাঁর শিক্ষাগত ডিপ্লোমা বাতিল করা হয়।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, এরদোয়ানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। আন্দোলনের একপর্যায়ে এবার শুরু হয়েছে এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি।
এ ঘটনাকে ২০১৩ সালের পরে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। সে বছরের আন্দোলন চলাকালে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
এবার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে ইস্তাম্বুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এ ছাড়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জমায়েতের ওপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটা সহিংসতার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অবস্থিত একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমির শহরেও বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আঙ্কারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি প্রধান সড়ক ধরে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
দেশটির প্রশাসনের এমন বাধা ও প্রেসিডেন্টের হুমকির তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি, এরদোয়ানের শাসনকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন অনেকে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’