সরকারি ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সচিবদের নির্দেশনা দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
Published: 24th, March 2025 GMT
সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কল্যাণের পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সচিবদের নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, যতটা সম্ভব বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার অনুকূলে বাজেটের বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো ব্যয় করার সময় জনগণের কল্যাণের বিষয়টি লক্ষ্য রেখে, একই সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সচিবদের। যথাসময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার পাশাপাশি সরকারি কাজে ধারাবাহিকতা নিশ্চিতেও দেওয়া হয়েছে তাগাদা।
সব সরকারই প্রায় একই উদ্দেশ্যে বাজেট দেয়। শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। কেন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি এ বিষয়ে সচিবরা কি আপনাকে কিছু জানিয়েছেন– এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অনেক কারণ আছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি। বিদ্যমান আমলাতন্ত্র দিয়ে কি যথাযথ বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন তো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এটি হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। নতুন বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে খাদ্য নিরাপত্তা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন। গুরুত্ব পাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর স্বার্থ। নতুন বাজেটে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী জুনে নতুন বাজেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বাজেট চূড়ান্ত করতে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করছেন অর্থ উপদেষ্টা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড স ল হউদ দ ন আহম দ ত করত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।