শঙ্কামুক্ত তামিম, আজ রাতেই আনা হতে পারে ঢাকায়
Published: 25th, March 2025 GMT
অবশেষে এলো স্বস্তির খবর, হার্ট অ্যাটাকের পর শঙ্কামুক্ত হয়েছেন তামিম ইকবাল। গতকাল (সোমবার) ডিপিএল ম্যাচ চলাকালে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে, যেখানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হৃদযন্ত্রে ব্লক ধরা পড়ার পর জরুরিভিত্তিতে রিং পরানো হয় এই ওপেনারকে। তখন চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন, তিনি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নন। তবে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে জানা গেছে, তামিম এখন শঙ্কামুক্ত এবং পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কোনো সময় হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন।
সাভারের কেপিজে হাসপাতালে (প্রাক্তন বেগম ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতাল) তামিমকে ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। গত রাত পর্যন্ত তার অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। আজ সকালে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয় এবং কিছুক্ষণ হাঁটারও চেষ্টা করেছেন তিনি। স্বজনরাও তার সঙ্গে দেখা করেছেন।
তামিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে দুপুর ১২টার দিকে কেপিজে হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
ডা. আবু জাফর বলেন, ‘সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সবসময় রোগ নির্ণয় সম্ভব হয় না। প্রথম ইসিজিতে কোনো বড় পরিবর্তন ধরা পড়েনি, তবে আজ সকালে করা ইকো রিপোর্ট ঠিক এসেছে। তারপরও যেকোনো সময় কিছু ঘটতে পারে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্তের ওপর পরবর্তী ব্যবস্থা নির্ভর করবে।’
গতকাল শাইনপুকুরের বিপক্ষে ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর তার হৃদযন্ত্রে ব্লক ধরা পড়ে এবং চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফের তত্ত্বাবধানে এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং করা হয়। ডা. মারুফের চিকিৎসা এবং মোহামেডানের ট্রেনার ইয়াকুবের সিপিআর দেওয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তার মতে, ‘সিপিআর না দিলে মস্তিষ্কে জটিলতা দেখা দিতে পারত।’
মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন জানিয়েছেন, তামিমের শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে আজ সন্ধ্যা বা রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনে থাইল্যান্ডে নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে
সরকারের ওপর তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝারি মাত্রায় আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানখাত সম্পর্কিত বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে- সম্মিলিতভাবে এসওই খাত দেশের সরকারের জন্য মাঝারি মাত্রার ফিসকাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এসওই এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর তিনভাবে প্রভাব ফেলে।
প্রথমত, যদি এসওই-এর ঋণের জন্য গ্যারান্টি দেয় এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকারের তা পুনর্ভরণসহ আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এটি ঘটতে পারে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় বা তাদের প্রকল্পগুলো আশানুরুপ উৎপাদশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি না হলেও যদি তারা ক্রমাগত লোকসান করে, তাহলে তাদের সচল রাখতে সরকারকে বাড়তি পুঁজি যোগান দিতে হতে পারে।
তৃতীয়ত, যদি এসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত মুনাফা না করতে পারে তাহলে সেটিও সরকারের রাজস্ব আয়ে চাপ বাড়াতে পারে। সার্বিকভাবে দেখা গেছে যে, এসওই সমূহের সম্পদকে সুচিন্তিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে সর্ব্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে আট ধরণের নীতি কৌশল গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এই নীতি কৌশলের মধ্যে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে সরকার ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি) টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মতো কর্মসূচি চালু করেছে। সরকার ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরির মাধ্যমে উপকারভোগীর সহায়তাপ্রাপ্তি ব্যবস্থা পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।
বিদ্যুৎখাতের পরিকল্পনা বিষয়ে নীতি কৌশলে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎখাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০২৬ -২০২৭ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তুকি কমিয়ে এখাতকে আর্থিকভাবে টেকসই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সার ব্যবস্থাপনা পুনঃমূল্যায়ন করছে এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের প্রাপ্যতা ও সরবরাহে যেনন কোনো বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করছে।
ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সরকার অর্থ বিভাগের অধীনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বন্ড/বিল বাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
নীতি কৌশলের বিষয়ে আরও রয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদারে সরকার আর্থিক লেনদেনের অটোমেশন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।
রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ‘মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল(এমএলটিআরএস,২০২৫)’ ও ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার নীতিমালা’ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকর করার মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য দক্ষ এসেট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন ঝুঁকি অর্থায়নের উত্তম বিকল্পের মূল্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সামগ্রিক দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়া প্রদান কৌশল তৈরি করা যেতে পারে বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/হাসনাত/টিপু