বিকাশের ডোনেশন সেবার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে থাকছেন লাখো মানুষ
Published: 25th, March 2025 GMT
‘দান-অনুদান একটা মহৎ কাজ, সওয়াবের কাজ। এতে আত্মার পরিতৃপ্তি হয়, আত্মার আত্মশুদ্ধি হয়। আর এখন যেহেতু প্রায় সবকিছুই ডিজিটালি করা যায়, আমরা যাঁদের জন্য অনুদান দিতে চাই, তাঁদের চাইলে ঘরে বসেই দিয়ে দিতে পারি। এই কাজটাই সহজ করে দিয়েছে বিকাশের ডোনেশন সেবা,’ বলছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শহিদ উল্লাহ।
সাবেক এই কর্মকর্তার কথা ধরেই বলা যায়, যাঁর সাহায্য প্রয়োজন আর যিনি সাহায্য দিতে চান, তাঁদের মধ্যে দূরত্ব এখন আর বাধা নয়। গ্রহীতা ও দাতার মধ্যে এই দূরত্ব দূর করে বিকাশের মতো প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে মানবিক ও সামাজিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার বিশ্বস্ত মাধ্যম। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কিংবা দূরত্বের দেয়াল ভেঙে মানুষের ভালোবাসা পৌঁছে যাচ্ছে সঠিক ঠিকানায়। উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে, দানের প্রচলিত পদ্ধতিতে বিকাশ এনেছে আমূল পরিবর্তন; নিশ্চিত করছে, প্রতিটি সাহায্য যেন দ্রুত আর নিরাপদে পৌঁছে যায় সঠিক মানুষের কাছে। বিকাশ অ্যাপ থেকে কয়েকটি ট্যাপেই ৪০টি সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি অসহায় মানুষের জন্য সাহায্য পাঠানো যাচ্ছে। দাতার জন্য দানের প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় মানবিকতার প্রকাশ এখন আরও সাবলীল হয়েছে এবং আরও বেশি মানুষ সাধ্যমতো দান করছেন।
‘এখন তো ব্যাংকিং, লেনদেন—সবকিছুই অ্যাপে করছি। দান করার জন্য বিকাশের এই ডোনেশন অপশনটা খুবই সময়োপযোগী। আমাদের সমাজে কিছু প্রতারক আছে, মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে কিন্তু সেটা জায়গামতো পৌঁছায় না, আবার কেউ কেউ পার্সেন্টেজ নেয়। এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে দেখলাম, অ্যাপের মাধ্যমে কাজটা করলে আমি যাঁকে দান করছি, তাঁর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, আবার আমার দেওয়া অনুদান কোথায় খরচ হচ্ছে, সেটাও জানতে পারছি,’ বলেন শহিদ উল্লাহ।
শহিদ উল্লাহর মতো লাখো মানুষের পাঠানো টাকা দাতব্য ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যয় হয় এতিম, ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অতিদরিদ্র পরিবারের খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহায়তায়। তেমনই একজন শাহীনূর। তাঁর দুই মেয়ে তানহা ও সুমাইয়া থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় চলছে তাদের চিকিৎসা।
শাহীনূর বলেন, ‘ডাক্তাররা বলেছেন, যত দিন বেঁচে থাকবে, তত দিন রক্ত দিতে হবে। বড় মেয়েটাকে ১৪ বছর ধরে ব্লাড দিচ্ছি। আমরা খাই বা না খাই, ওদের চিকিৎসা দেওয়ার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। চিকিৎসা তো করতে পারতাম না, যদি থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা না পেতাম।’
বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন দেওয়া যায়, এমন একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা.
বিকাশে কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিতে পারছেন
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ডু-নেশন ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, এসো সবাই, খুকুমনি ফাউন্ডেশন, ফ্রেন্ডশিপ, হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম, প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ত্রাণ তহবিল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ত্রাণ তহবিল, ব্র্যাক, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বিএনএফডব্লিউ ডোনেশন ফান্ড, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী কল্যাণ ট্রাস্ট, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ত্রাণ তহবিল, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পরিবার কল্যাণ সংঘ অনুদান ফান্ড, টিএমএসএস, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, একশনএইড, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন (জাকাত), আইসিডিডিআরবি, জাগো ফাউন্ডেশন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, বিদ্যানন্দ, মির্জাপুর এক্স ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশন, মজার ইশকুল, ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, প্রথম আলো ট্রাস্ট, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, সাফল্যময় সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা, শক্তি ফাউন্ডেশন, এসওএস চিলড্রেন ভিলেজ বাংলাদেশ, তাসাউফ ফাউন্ডেশন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন—এসব প্রতিষ্ঠানে সহজেই অনুদান দিতে পারছেন মানুষ। বিকাশের মাধ্যমে ডোনেশনের বিস্তারিত জানতে পারেন এই লিংকে।
বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘বিকাশ সব সময়ই চেষ্টা করছে মানুষের প্রতিদিনকার লেনদেনগুলোকে সহজ করতে। এই রমজান মাসে মানুষ জাকাত দেন, দান-সদকা প্রদান করেন। এ প্রক্রিয়াকে সহজ করা, অনুদানের পরিপূর্ণ সৎ ব্যবহার নিশ্চিত করার সুযোগ তৈরির কথা মাথায় রেখেই বিকাশ এ ডোনেশন সেবা নিয়ে এসেছে। প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানে এ মুহূর্তে মানুষ বিকাশে অনুদান দিতে পারছেন। ভবিষ্যতে প্ল্যাটফর্মটিকে আরও বড় করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে, যাতে আমাদের গ্রাহকেরাও পছন্দের প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিতে পারেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন দ ন দ ত ণ তহব ল কল য ণ দ ন কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক