যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক অভিযান নিয়ে গ্রুপ চ্যাটে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে, ওই গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে একজন সাংবাদিককেও রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাট মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে।

ওই গ্রুপে ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ছাড়াও ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। সেখানে দ্য আটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকেও রাখা হয়েছিল।

জেফরি গোল্ডবার্গ লিখেছেন, ‘আমার সন্দেহ ছিল, এই টেক্সট গ্রুপটা আসল হতেই পারে না। কারণ, আমি ভাবতে পারিনি, জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব সিগন্যালের (মেসেজিং অ্যাপ) মাধ্যমে কথা বলবেন। পরবর্তী সামরিক পরিকল্পনার কথা জানাবেন।’

গ্রুপ চ্যাটে ইয়েমেনে হুতিদের ওপর বিমান হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ফলে বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই গোল্ডবার্গ জেনে গিয়েছিলেন, এই হামলা হতে চলেছে।

গ্রুপ চ্যাটে কী হয়েছিল

১৫ মার্চ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর আক্রমণ চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক ঘণ্টা আগে গোল্ডবার্গ গ্রুপে বিমান হামলার বিষয়টি জানতে পারেন।

গোল্ডবার্গের তখনো মনে হয়েছিল, এই গ্রুপটা ভুয়া। কিন্তু যখন ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার খবর এল, তখন তিনি বুঝতে পারেন এটা ভুয়া নয়। এরপর তিনি সেই গ্রুপ থেকে বের হয়ে যান।

সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের মুখপাত্র ব্রেন হিউজেস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গ্রুপের থ্রেড দেখে মনে হচ্ছে, এটা ঠিক গ্রুপ। আমরা দেখছি, কী করে ওই নম্বরটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ঢুকে গিয়েছিল।’

ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ

ওই চ্যাট গ্রুপে আটলান্টিকের সাংবাদিক কীভাবে এলেন, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’

পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, ‘জাতীয় সুরক্ষা টিম এবং জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের ওপর ট্রাম্পের পূর্ণ আস্থা আছে।’

হেগসেথ অবশ্য জানিয়েছেন, কোনো সামরিক পরিকল্পনার কথা গ্রুপে আলোচনা করা হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, কেউই গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনার কথা শেযার করেননি। গোল্ডবার্গ প্রতারক এবং সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কোনো সুনাম নেই।’

কিন্তু কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এ ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। হাউসের অন্যতম প্রধান ডেমোক্র্যাট সদস্য হাকিম জেফরিস বলেছেন, ‘কংগ্রেসের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা এবং এ ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করা।’

অপর দিকে সশস্ত্র বাহিনীসংক্রান্ত কমিটির সদস্য ও ডেমোক্র্যাট নেতা প্যাট রায়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, ‘যদি রিপাবলিকানরা হাউসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করেন, তাহলে আমি নিজে থেকে এই আলোচনার উদ্যোগ নেব।’

সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেছেন, ‘এটা চরম বেআইনি ও ভয়ংকর ঘটনা। এটা বিশ্বাস করা যায় না। যেকোনো মানুষকে গ্রুপে ঢোকানো হয়েছে। সেই গ্রুপে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটা ভাবা যায় না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব ষয়ট বল ছ ন হয় ছ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

১০ ও ১১ মে সিটি ব্যাংকের সব সেবা বন্ধ থাকবে

ডেটা সেন্টার স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন করতে লেনদেনসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম দুই দিন বন্ধ রাখবে সিটি ব্যাংক। আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে ব্যাংকটিকে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ–সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, ডেটা সেন্টার স্থানান্তর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে সিটি ব্যাংককে সম্মতি দেওয়া হলো।

১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা সিটি ব্যাংকের গ্রাহক গত বছর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখে। ২০০৭ সালে ব্যাংকটির গ্রাহক ছিল ৬৮ হাজার। ব্যাংকটির কর্মকর্তার সংখ্যা এখন ৫ হাজার ৩২১ জন। দেশের সবচেয়ে বেশি সাত লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক রয়েছে সিটি ব্যাংকের। ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ডের ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। আর ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। গত বছর শেষে হাজার কোটি টাকা মুনাফার মাইলফলক ছুঁয়েছে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছর শেষে সমন্বিত মুনাফা করেছে ১ হাজার ১৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ বেড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ