যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক অভিযান নিয়ে গ্রুপ চ্যাটে আলোচনা ঘিরে হইচই
Published: 25th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক অভিযান নিয়ে গ্রুপ চ্যাটে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে, ওই গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে একজন সাংবাদিককেও রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাট মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে।
ওই গ্রুপে ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ছাড়াও ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। সেখানে দ্য আটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকেও রাখা হয়েছিল।
জেফরি গোল্ডবার্গ লিখেছেন, ‘আমার সন্দেহ ছিল, এই টেক্সট গ্রুপটা আসল হতেই পারে না। কারণ, আমি ভাবতে পারিনি, জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব সিগন্যালের (মেসেজিং অ্যাপ) মাধ্যমে কথা বলবেন। পরবর্তী সামরিক পরিকল্পনার কথা জানাবেন।’
গ্রুপ চ্যাটে ইয়েমেনে হুতিদের ওপর বিমান হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ফলে বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই গোল্ডবার্গ জেনে গিয়েছিলেন, এই হামলা হতে চলেছে।
গ্রুপ চ্যাটে কী হয়েছিল
১৫ মার্চ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর আক্রমণ চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক ঘণ্টা আগে গোল্ডবার্গ গ্রুপে বিমান হামলার বিষয়টি জানতে পারেন।
গোল্ডবার্গের তখনো মনে হয়েছিল, এই গ্রুপটা ভুয়া। কিন্তু যখন ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার খবর এল, তখন তিনি বুঝতে পারেন এটা ভুয়া নয়। এরপর তিনি সেই গ্রুপ থেকে বের হয়ে যান।
সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের মুখপাত্র ব্রেন হিউজেস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গ্রুপের থ্রেড দেখে মনে হচ্ছে, এটা ঠিক গ্রুপ। আমরা দেখছি, কী করে ওই নম্বরটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ঢুকে গিয়েছিল।’
ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ
ওই চ্যাট গ্রুপে আটলান্টিকের সাংবাদিক কীভাবে এলেন, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’
পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, ‘জাতীয় সুরক্ষা টিম এবং জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের ওপর ট্রাম্পের পূর্ণ আস্থা আছে।’
হেগসেথ অবশ্য জানিয়েছেন, কোনো সামরিক পরিকল্পনার কথা গ্রুপে আলোচনা করা হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, কেউই গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনার কথা শেযার করেননি। গোল্ডবার্গ প্রতারক এবং সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কোনো সুনাম নেই।’
কিন্তু কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এ ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। হাউসের অন্যতম প্রধান ডেমোক্র্যাট সদস্য হাকিম জেফরিস বলেছেন, ‘কংগ্রেসের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা এবং এ ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করা।’
অপর দিকে সশস্ত্র বাহিনীসংক্রান্ত কমিটির সদস্য ও ডেমোক্র্যাট নেতা প্যাট রায়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, ‘যদি রিপাবলিকানরা হাউসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করেন, তাহলে আমি নিজে থেকে এই আলোচনার উদ্যোগ নেব।’
সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেছেন, ‘এটা চরম বেআইনি ও ভয়ংকর ঘটনা। এটা বিশ্বাস করা যায় না। যেকোনো মানুষকে গ্রুপে ঢোকানো হয়েছে। সেই গ্রুপে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটা ভাবা যায় না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব ষয়ট বল ছ ন হয় ছ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক