ইয়েমেনে হামলার মার্কিন পরিকল্পনা ভুল করে ফাঁস
Published: 26th, March 2025 GMT
ইয়েমেনে হামলার একটি মার্কিন পরিকল্পনা ‘ভুলে’ ফাঁস হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি মেসেজিং গ্রুপে এ-সংক্রান্ত বার্তা আদান-প্রদান করছিলেন। এ সময় ফাঁসের ঘটনা ঘটে। গ্রুপটিতে একজন সাংবাদিককে যুক্ত করা হয়েছিল। ইয়েমেনে ইরানসমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ওপর মার্কিন বিমান হামলার কিছুক্ষণ আগে পরিকল্পনাটি ফাঁস হয় বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রয়টার্স জানায়, এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। তারা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন; এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। ঘটনাটি অবশ্যই কংগ্রেসকে তদন্ত করতে হবে। ফাঁসকারী ওই সাংবাদিক ছিলেন মার্কিন পত্রিকা দ্য আটলান্টিকের। ওই পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক বলেন, ১৩ মার্চ বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ সিগন্যালের একটি এনক্রিপটেড চ্যাট গ্রুপে অপ্রত্যাশিতভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। গ্রুপটির নাম ছিল ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’।
ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা সমন্বয় করার জন্য একটি ‘টাইগার টিম’ গঠন করতে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ তাঁর সহকারী অ্যালেক্স ওংকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউস বলেন, দৃশ্যত চ্যাট গ্রুপটি সঠিক ছিল।
লোহিত সাগরে ইসরায়েলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাহাজে হামলার প্রেক্ষাপটে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ১৫ মার্চ বড় ধরনের আক্রমণ পরিচালনার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একই সঙ্গে ইরানকে সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করার জন্য সতর্ক করে দেন। সাংবাদিক গোল্ডবার্গ জানান, হুতিদের ওপর ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ হামলার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত মেসেজিং গ্রুপটিতে তুলে ধরেন। হামলার লক্ষ্যবস্তু, মোতায়েন অস্ত্র ও হামলার ক্রমসম্পর্কিত তথ্যসহ সবকিছু এ পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়। গোল্ডবার্গ তাঁর প্রতিবেদনে বিস্তারিত পরিকল্পনার কথা না জানালেও সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করে এমন আলাপ-আলোচনা করাকে খুবই বেপরোয়া বলে আখ্যায়িত করেন।
গ্রুপটিতে আরও যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেন– মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, জাতীয় গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না। আমি আটলান্টিকের বড় ভক্তও নেই।’ হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
হুতির উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানায়, সম্প্রতি ইয়েমেনে চালানো যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে পাঁচ শিশুও রয়েছে। ইয়েমেনের বন্দরনগরী হুদাইদাতে এসব হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা পুনরায় শুরুর প্রতিবাদে সম্প্রতি লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করে সশস্ত্র সংগঠন হুতি। এর পরই ইসরায়েলের সুরক্ষায় ট্রাম্পের নির্দেশে ইয়েমেনে হামলা শুরু করে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।