একাত্তরের অর্জনকে পুনঃস্থাপন করার সংগ্রাম চব্বিশ: মঞ্জু
Published: 26th, March 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, “অনেকে বলেন যে একাত্তর এবং চব্বিশ কি এক? না, অবশ্যই এক না। একাত্তর ছিল স্বাধীনতার সংগ্রাম, আর চব্বিশ হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার অর্জনকে পুনঃস্থাপন করার সংগ্রাম।”
বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “অদ্ভুত একটা মিল আছে। সেটা হচ্ছে, এখানেও গণহত্যা হয়েছে এবং গণহত্যার প্রেক্ষিতে আপামর জনসাধারণ রাজপথে নেমে এসেছে এবং তারই ভিত্তিতে বাংলাদেশ নতুন করে জন্ম নিয়েছে এবং নতুন একটা প্রত্যাশার সামনে আমরা এসেছি। এখন বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশার চাপ আমাদের সামনে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আপাতত যেই চ্যালেঞ্জটা সামনে আছে—দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, তারপর আসছে একটা বিচার ব্যবস্থা করা—যারা এই খুন, গুম করেছে তাদের বিচার করা। তৃতীয়ত, আমরা যেই সংস্কারের স্বপ্ন দেখেছি, সংস্কার করে রাষ্ট্রটাকে একটা নতুন জায়গায় নিয়ে যাওয়া। এবং সবশেষে, একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। আমরা মনে করি, এই চারটি কাজ যদি আমরা করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ একটা রাইট ডিরেকশনে দাঁড়াবে এবং আগামী দিনে আমরা আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন, আমাদের চব্বিশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারব।”
মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “নতুন করে একটা প্রত্যাশা, নতুন করে একটা শপথ নেই। আমাদের স্বাধীনতা দিবসটা আমাদের জন্য সেরকম। আমাদের দেশটা যখন জন্ম নিয়েছিল একটা শিশুর আকারে, তখন আমাদের যেই প্রত্যাশা ছিল, বড় হতে হতে অনেক প্রত্যাশার স্বপ্ন আমাদের মিস হয়েছে, অনেক স্বপ্ন আমরা না পাওয়ার বেদনায় ডুবে গেছি। এমনকি এই না পাওয়ার বেদনার অনেক জমতে জমতে আমরা নব্বইয়ে একটা গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম।”
তিনি বলেন, “সর্বশেষ দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৬ বছরের একটা অন্ধকার যুগ পেরিয়ে চব্বিশের ৫ আগস্ট আমরা আরেকটা নতুন প্রেক্ষাপট পেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “সত্তরের নির্বাচন নিয়ে যেই ষড়যন্ত্র হয়েছিল, বিজয়ী হওয়ার পরও বাংলার মানুষকে ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হয়নি এবং এরপর ২৫ মার্চ যেই গণহত্যা চালানো হয়েছে, তার একটা ব্যাকল্যাশ হয়েছে ২৬শে মার্চ, এবং ৯ মাসের দীর্ঘ একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ।”
এসময় তার সঙ্গে এবি পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র স স ব ধ নত
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।