ঈদ এলেই বড় বড় শহরগুলো ফাঁকা হতে থাকে। বেশিরভাগ মানুষ ছুটে যান গ্রামে। কেউ চলে যান দেশের বাইরে। ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাচ্ছে। এই সময় প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রায় মানুষ শূন্য। ফাঁকা শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকাংশে নাজুক হয়ে পড়ে। ঈদের ছুটিকে নিশ্চিন্ত ও আনন্দময় করতে ডিএমপির ১৪টি নির্দেশনা মানতে পারেন। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নির্দেশনাগুলো জানিয়ে দিচ্ছি।

এক.

বাসাবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোন অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে।

দুই. বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ত্যাগের আগে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে।

আরো পড়ুন:

ঈদে বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় ডিএমপির ১৪ নির্দেশনা

ঈদে লিভিংরুমের সৌন্দর্য বাড়াতে একটি জিনিস বদলে নিতে পারেন

তিন. বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

চার. বাসাবাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা অ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।

পাঁচ. রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

ছয়. অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

সাত. বাসাবাড়ি ত্যাগের আগে যে সব প্রতিবেশী/পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসী ঢাকায় অবস্থান করবেন তাদের বাসার প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করতে হবে এবং ফোনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

আট. ভাড়াটিয়াদের আগেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষে বাসা ত্যাগের বিষয়টি জানাতে হবে।

নয়. অনুমতি ছাড়া কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে।

দশ. বাসাবাড়ি বা প্রতিষ্ঠান ত্যাগের আগে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

এগারো. বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে।

বারো. বাসার জানালা-দরজার পাশে কোনও গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় প্রবেশ করতে না পারে।

তেরো. মহল্লা বা বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।

চৌদ্দ. ঈদে মহল্লা বা বাসায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও জানাতে হবে।

জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৩২০-০৩৭৮৪৫, ০১৩২০-০৩৭৮৪৬, ২২৩৩৮১১৮৮, ০২৪৭১১৯৯৮৮, ০২৯৬১৯৯৯৯ এবং জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এমপ র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ