ঈদের বাড়িতে যাওয়ার আগে রোজার বিধান মনে রাখুন
Published: 28th, March 2025 GMT
আপনার বাড়ি যদি ৪৮ মাইল বা ৭২ কিলোমিটার দূরে হয়, তাহলে ভ্রমণ শুরু করামাত্রই আপনি একজন মুসাফির। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ সফর করা এবং যারা সবসময় সফরে থাকে তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। মুসাফিরের জন্য রোজা না রাখা বৈধ। তবে যদি আপনি দিনের আলো থাকতেই বাড়িতে পৌঁছে থাকেন, তাহলে বাকি অংশ না খেয়ে থাকবেন এবং পরে সময়ে রোজাটির কাজা আদায় করে নেবেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৯,৪৩৬-৯,৪৩৮)
ঈদের আগে যদি গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে কোনও দূরদেশে ভ্রমণে যান, যার দূরত্ব ৪৮ মাইল বা ৭২ কিলোমিটারের বেশি এবং যতি ১৫ দিনের কম সময় থাকেন, তাহলে পুরো দিনগুলোতেই চাইলে রোজা না রেখে থাকতে পারেন। পরবর্তী সময় রোজাগুলো সুবিধামতো আদায় করে নিলেই হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/২০৬)
আরও পড়ুনইতিকাফ অবস্থায় কী করা যায়, করা যায় না২১ মার্চ ২০২৫মনে রাখতে হবে
১.
২. যে ব্যক্তি সাহরি খেয়েছেন, তিনি সফরে বের হবেন, কেবল এমন ইচ্ছা করেই খাবার গ্রহণ করতে পারবেন না। বরং পথে যাত্রার সূচনা করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/২০৬)
৩. দিনের বেলায় যদি সফর শেষ হয়ে যায়, তাহলে সেদিনের অবশিষ্ট সময় রমজানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। আর পরে এ রোজার কাজা করে নেবেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৯,৪৩৬-৯,৪৩৮)
আরও পড়ুনরমজান দোয়া কবুলের মাস২২ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি