এখনো কৈশোর পার হয়নি মোহাম্মদ তামিমের। তার আগেই শুরু হয়ে গেছে জীবিকার যুদ্ধ। দিনের বেশির ভাগ সময় কেটে যায় কারখানায়। ছোট্ট এই জীবনে খুশি-আনন্দের সময় তেমন আসে না। বছর ঘুরে যখন ঈদ আসে, তখন কিছুটা আনন্দ ধরা দেয় তামিমের কাছে। তবে এবার তার ঈদ অনেক বেশি বর্ণিল ও উৎসবমুখর।

শুধু তামিম নয়, তার মতো অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত কয়েক শ শিশুর ঈদের আনন্দ আরও রঙিন করে তুলতে দারুণ এক উদ্যোগ নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে আয়োজন করা হয়েছে ‘সবাইকে নিয়ে ঈদ আনন্দ’ অনুষ্ঠান, চলবে ঈদের দিন ও পরদিন।

দুই দিনের আয়োজনে শিশু-কিশোরদের ঈদের খুশি দ্বিগুণ করতে নানা ধরনের রাইড, অস্থায়ী সুইমিং পুল, নাগরদোলাসহ নানা ধরনের খেলার আয়োজন করেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এসব খেলায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জেতারও সুযোগ রাখা হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে আটা, ময়দা, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। ঈদে ঘুরতে বের হওয়া শিশু-কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের জন্য বিরিয়ানি, পায়েস, সেমাইসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের কসমোপলিটন এলাকায় মা-বাবা ও ভাইদের সঙ্গে থাকে মোহাম্মদ তামিম। এক বছর আগে ভোলা থেকে চট্টগ্রাম নগরে আসে তার পরিবার। পরিবারে আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি তামিমের। এখন কাজ করে একটি গ্রিল তৈরির ওয়ার্কশপে।

ঈদের দিন সকালে তামিম বাসা থেকে একা একাই চলে আসে দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে। পরনে নতুন শার্ট-প্যান্ট। নাগরদোলায় চড়া শেষ করেছে, অপেক্ষা করছে খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য। এ সময় সে প্রথম আলোকে বলে, শহরে এসেছে এক বছর হচ্ছে। আগে ভোলায় গ্রামের বাড়িতে ছিল। এ ধরনের রাইড, সুইমিং পুল দেখেনি। পার্কেও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। এবারের ঈদটা অন্য রকম কাটছে। এ ধরনের আয়োজনে এসে সে খুব খুশি। তবে একটি কারণে মন খারাপ। ছোট ভাই অসুস্থ, এ জন্য আসতে পারেনি। সে যদি আসত, তাহলে আরও বেশি ভালো লাগত।

আট ও ছয় বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে উদ্যানে ঘুরছিলেন সেলিনা বেগম। ঈদের দিনে এমন আয়োজনে দারুণ খুশি তিনি। পোশাক কারখানার এই কর্মী বলেন, তাঁদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই চাইলেও মেয়েদের নিয়ে পার্কে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। মাঝেমধ্যে মেয়েদের বিদ্যালয় থেকে পার্কে নিয়ে যায়। তবে তখন তাঁর যাওয়া হয় না। আজকে ঈদের দিনে দুই মেয়েকে নিয়ে এখানে এসেছেন। মেয়েরা সুইমিং পুলে সাঁতার কেটেছে। নাগরদোলায় চড়েছে। মেয়েদের খুশিতে তাঁরও আনন্দ লাগছে।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে আয়োজন করা হয়েছে ‘সবাইকে নিয়ে ঈদ আনন্দ’ অনুষ্ঠান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন র জন য ধরন র আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ