শুধু খেলতেই নয়, আরেকটি বিশ্বকাপ জিততেও চান কোহলি
Published: 1st, April 2025 GMT
কত আলোচনাই হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে সংবাদমাধ্যমে কত ধরনের খবরই না বেরিয়েছে। এটাই কি ওয়ানডেতে রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির শেষ অভিযান কি না, এমন প্রশ্ন ঘুরেছে ক্রিকেট–বিশ্বে। ভারত যখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল জিতল, কতজনই অপেক্ষায় ছিলেন, রোহিত ও কোহলি কখন অবসরের ঘোষণা দেন! ঘোষণা আসছে না বলে রোহিতকে তো ফাইনালের পর হওয়া সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নই করা হলো, ওয়ানডে ক্যারিয়ারের যতি টানবেন কবে। রোহিত সময়ের হাতেই তুলে রেখেছেন তার উত্তর। কোহলি এত দিন কিছু বলেননি, তবে এবার ইঙ্গিত দিলেন আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে চান।
সম্প্রতি মুম্বাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কোহলি। সেখানে অনুষ্ঠানের উপস্থাপক তাঁর কাছে জানতে চান ক্যারিয়ারের পরবর্তী লক্ষ্যের কথা। কোহলির উত্তর, ‘জানি না পরবর্তী বড় পদক্ষেপ কী! তবে পরের বিশ্বকাপ জেতার চেষ্টা করব।’ টি-টোয়েন্টি থেকে যেহেতু আগেই অবসর নিয়ে ফেলেছেন, তাই কোহলি যে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কথাই বলেছেন, সেটা না বললেও চলে। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায়।
সম্প্রতি ভারতের হয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছেন কোহলি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
লোহার ফটক ভাঙার শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠল। বিক্ষুব্ধ লোকজন তখন দৌড়ে ঢুকে পড়লেন ভবনের ভেতরে। কয়েক ঘণ্টা আগেও যেসব প্রতিবন্ধক ছিল ক্ষমতার প্রতীক, মুহূর্তেই সেগুলো গুঁড়িয়ে দিল জনতার ঢল।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের করিডর ভরে গেল কাদামাখা পায়ে হাঁটার শব্দে। কেউ জানালার কাচ ভাঙলেন, কেউ আবার দামি চাদর আর জুতা নিয়ে গেলেন।
নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা যে বাড়ি এত দিন ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য তাঁরাই তা দখলে নিলেন।
এ দৃশ্য নেপালের গত সপ্তাহের। আবার এটি শ্রীলঙ্কার ২০২২ সালের কিংবা বাংলাদেশের ২০২৪ সালেরও চিত্র।
এসব আন্দোলনের আসল শক্তি হলো তরুণদের স্বপ্ন দেখা—একটা ভালো রাজনীতি আর ভালো অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কল্পনা করার ক্ষমতা। কিন্তু সেই কল্পনার সঙ্গে বাস্তব জীবনের বড় পার্থক্য তাঁরা বুঝতে পারছেন। স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবের এ ফারাকই তাঁদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে।পল স্ট্যানিল্যান্ড, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) মানুষের দেশ নেপাল, ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত। সেখানকার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ প্রথাগত নির্বাচনী গণতন্ত্রের চেনা ধারা ভেঙে দিয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশগুলোয় একের পর এক সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ প্রজন্ম বিশ্বকে নতুন এক প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন—দক্ষিণ এশিয়াই কি জেন–জি (জেনারেশন জেড) প্রজন্মের বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল?
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এটা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। এখানে একধরনের নতুন অস্থির রাজনীতির জন্ম হচ্ছে।’
গত বৃহস্পতিবার প্রায় ১০ হাজার নেপালি তরুণ–তরুণী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। এ তরুণ–তরুণীদের অনেকে প্রবাসী। তবে কোনো নির্বাচনী ব্যালটে নয়, বার্তা আদান–প্রদানের মাধ্যম ডিসকর্ডে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বাছাই করেছেন। এর আগে তিন দিনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিবিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয় এবং সেনাসদস্য ও পুলিশের দমন–পীড়নে ৭০ জনের বেশি নিহত হন। এখন নেপাল সরকার ঘোষণা করেছে, আগামী মার্চে নতুন নির্বাচন হবে।
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির জেন–জি প্রজন্মকে উপহাস করার কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর পদত্যাগ দেখিয়ে দিয়েছে—দক্ষিণ এশিয়ার তরুণেরা বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আস্থাহীন হলে নিজেরাই ক্ষমতা হাতে তুলে নিচ্ছেন এবং নিজেদের নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী প্রশাসন কে হবে, তা–ও নির্ধারণ করছেন।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনের পেছনে প্রতিটির নিজস্ব ইতিহাস ও অনন্য প্রেক্ষাপট আছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্যে মিলও আছে—নতুন প্রজন্ম আর ভাঙা প্রতিশ্রুতি মেনে নিচ্ছে না।স্ট্যানিল্যান্ড বলেন, এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নাটকীয় পরিবর্তন। এ অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক আন্দোলনের সাক্ষী, তবে সরকার পতনের ঘটনা বিরল।
‘এ ধরনের আন্দোলন বিভিন্ন দেশে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থান থেকে আলাদা। দক্ষিণ এশিয়ার সংকট বরাবরই অন্যভাবে সমাধান হয়েছে, এবার সেটা ভিন্নপথে যাচ্ছে’, বলেন স্ট্যানিল্যান্ড।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনের পেছনে প্রতিটির নিজস্ব ইতিহাস ও অনন্য প্রেক্ষাপট আছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্যে মিলও আছে—নতুন প্রজন্ম আর ভাঙা প্রতিশ্রুতি মেনে নিচ্ছে না।
এ ছাড়া দেশগুলোর আন্দোলন একে অন্যের কাছ থেকেও শিক্ষা নিচ্ছে।
তিন দেশের আন্দোলনের মূল কারণ এক—বৈষম্য আর দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণি। এ শ্রেণি তরুণ প্রজন্মের বাস্তব চাওয়া-পাওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।মীনাক্ষী গাঙ্গুলি, এইচআরডব্লিউর দক্ষিণ এশিয়ার উপপরিচালক কলম্বো থেকে ঢাকা হয়ে কাঠমান্ডু: আন্দোলনের পটভূমিনেপালে সাম্প্রতিক জেন–জি আন্দোলনের সূত্রপাত সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে। সরকার বলেছিল, প্ল্যাটফর্মগুলোর অপব্যবহার হচ্ছে এবং নিয়ম মেনে নিবন্ধন করছে না। তবে ক্ষোভের প্রকৃত কারণ অন্য—বৈষম্য, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি; তা–ও এমন একটি দেশে, যেখানে প্রবাসী নেপালিদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির এক–তৃতীয়াংশ অবদান রাখছে।
হাজার হাজার কিশোর–কিশোরী স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই রাস্তায় নেমে আসে। ৭০ জনের বেশি নিহত হয়, আহত হয় শত শত।
শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে প্রেসিডেনশিয়াল সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের যাওয়া ঠেকাতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্স