বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ধরন পাল্টে গেছে ৷ এমন এক সময় ছিল যখন  প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে বন্ধুদের আমন্ত্রণ  এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য  ঈদ কার্ড ব্যবহার করতো মানুষ ৷ তবে এখন সে প্রচলনটা আর দেখা যায় না ৷

গত ৮-১০ বছর আগেও ঈদের সময় ঢাকা শহরসহ গ্রামগঞ্জের পাড়া মহল্লায় অলিতে  গলিতে ছোট্ট করে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে এই ঈদ কার্ড বিক্রয় করতো ব্যবসায়ীরা ৷ সেই সময় শিশু থেকে তরুণ সবাই বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এই ঈদ কার্ড ব্যবহার করতো ৷

বাহারি রংয়ের নকশাওয়ালা কার্ডে থাকতো  বিভিন্ন ফুল, লতা-পাতা চাঁদ তারা সহ বিভিন্ন চিত্র এবং সিনেমার নায়ক নায়িকাদের ছবি ৷

বিভিন্ন স্টাইলে  ঈদ কার্ডে  ঈদ মোবারক লেখা থাকতো৷ আরো থাকতো বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে মিলিত লেখা৷ ঈদ কার্ডের ভিতরে নাম ঠিকানা লিখে ঈদের সালামি ও দেওয়া হতো প্রিয় জনকে ৷

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে এবং মেসেজের মাধ্যমে এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মানুষ ৷তবে শৈশবে ঈদ কার্ড আদান-প্রদানের এই স্মৃতি একেবারেই মুছে যায়নি ৷ ঈদ কার্ডের কথা শুনলে আলাদা এক আবেগ কাজ করে অনেক মানুষের মনের ভেতরে ৷

এ বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা সাজ্জাদ বলেন ,ঈদ কার্ডের কথা শুনলে নব্বইয়ের দশকের কথা মনে পড়ে যায় ৷একজন আরেকজনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এই ঈদ কার্ডের মাধ্যম ব্যবহার করা হতো ৷

আমি নিজেও আমার স্কুলের বন্ধুদের এই ঈদ কার্ডে মাধ্যমে ঈদের দাওয়াত দিতাম এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম ৷ এখন আর গ্রামগঞ্জে এ কার্ডের দেখা পাওয়া যায় না হয়তো শহরের কোথাও পাওয়া যেতে পারে ৷ আমরা এখন বড় হয়ে গেছি আমাদের ছেলেমেয়েরা আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক কিছু জানেনা ৷

আমাদের এসব সম্পর্কের নতুন প্রজন্মের ধারণা অনেক কম ৷ নতুন প্রজন্ম ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন বন্ধুদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন৷ আমাদের সময় তখন এসব ছিল না ৷

তামান্না নামে আরো একজন বলেন, ২০১০ সালের দিকে পিতার সাথে বাজারে যেতাম এই ঈদ কার্ড কেনার জন্য ৷ তখন মা বাবাকে রমজান মাসের শুরুতেই বলে রাখতাম আমার বন্ধুদের ঈদ কার্ড দিব আমাকে ঈদ কার্ড কিনে দেওয়ার জন্য ৷

ঈদ কার্ডের মাধ্যমে বন্ধুকে দাওয়াত দিতাম ৷সারা বছর আমরা একসাথে পড়ালেখা করতাম এবং ঈদের দিন বন্ধুরা আমাদের বাড়িতে ঘুরতে আসতো এবং  একসাথে আমরা আনন্দ করতাম ৷

এখন সেই হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির কথা অনেক মনে পড়ে৷ আমার ছেলে মেয়েদের আমি বলি তখন আমরা কেমন জীবন কাটিয়েছিলাম ৷

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ঈদ ঈদ ক র ড র বন ধ দ র আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প
  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স