অস্ত্র কেনাবেচার সময় যাচাই করতে গিয়ে গুলিতে আহত ১, পুলিশের শটগান ও দুটি পিস্তল উদ্ধার
Published: 3rd, April 2025 GMT
খুলনা নগরের বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল ও একটি শটগান উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় সাতটি শটগানের গুলি, আটটি পিস্তলের গুলি ও একটি রামদাও পাওয়া গেছে। অবৈধ অস্ত্র রাখা ও কেনাবেচার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শটগান ও শটগানের গুলির গায়ে ‘বিডি পুলিশ’ শব্দটি লেখা আছে। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া শটগানটি পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের একটি। তবে কবে ও কোথা থেকে অস্ত্রটি লুট হয়েছিল, তা জানা যায়নি।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন ফারুক হোসেন ও খাইরুল সরদার। ফারুক হোসেনের বাড়ি থেকেই অস্ত্র ও গুলিগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। আর খাইরুল সরদার অস্ত্র কিনতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় হাতে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। খাইরুলের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ফারুক হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রগুলো পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফাইন্যান্স) আবু রায়হান মো.
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, এরপর খাইরুল সরদারকে নিয়ে হরিণটানা থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ আজ বৃহস্পতিবার বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। গুলিবিদ্ধ খাইরুল অস্ত্র বিক্রেতা ফারুক হোসেনের (২৩) বাড়ি দেখিয়ে দিলে সেই বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। ফারুক জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করে। একপর্যায়ে তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে রান্নাঘরে থাকা জ্বালানি কাঠের স্তূপের মধ্য থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, বসতঘরের মধ্যে থাকা টিনের বাক্সে রাখা একটি শটগান এবং শটগানের সাতটি গুলি, ঘরের ভেতরের দেয়ালের ওপর থেকে পিস্তলের আটটি গুলি ও একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনার কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল এবং একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ বলেন, অস্ত্রটি কোন থানার আওতায় বা কার কাছে ছিল তা পুলিশ সদর দপ্তর ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। এ কারণে সদর দপ্তরে অস্ত্রের বিষয় জানিয়ে চিঠি লেখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক হোসেন স্বীকার করেছেন তিনি বিভিন্ন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দুষ্কৃতকারীদের কাছে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। সন্ত্রাসীদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং আরও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শটগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।