নোমাডের সূচকে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট আয়ারল্যান্ডের, বাংলাদেশ কত নম্বরে
Published: 5th, April 2025 GMT
আন্তর্জাতিক ট্যাক্স ও অভিবাসন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নোমাড ক্যাপিটালিস্টের প্রকাশিত নোমাড পাসপোর্ট সূচক ২০২৫–এ বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের স্বীকৃতি পেয়েছে আয়ারল্যান্ড। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৮১তম। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৮২তম। সে হিসেবে দেশের পাসপোর্টের অবস্থান এক ধাপ এগিয়েছে।
দুবাইভিত্তিক বৈশ্বিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নোমাড ক্যাপিটালিস্ট গতকাল শুক্রবার পাসপোর্টের এই বৈশ্বিক সূচক প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে সূচকটি দেওয়া রয়েছে।
তালিকায় শীর্ষে থাকা আয়ারল্যান্ডের স্কোর ১০৯। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ১৭৬টি দেশে ভিসা ছাড়া কিংবা অন–অ্যারাইভাল ভিসার মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারেন।
নোমাডের তালিকায় বাংলাদেশের স্কোর ৩৮। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া কিংবা অন–অ্যারাইভাল ভিসায় ৫০টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন।
পাসপোর্টের অন্য সূচকগুলো সাধারণত ভিসামুক্ত কিংবা অন–অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণের সুবিধার ওপর ভিত্তিতে তৈরি হলেও নোমাড ক্যাপিটালিস্টের সূচক মোট পাঁচটি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে। এগুলো হলো ভিসামুক্ত ভ্রমণ (৫০ শতাংশ), করব্যবস্থা (২০ শতাংশ), বৈশ্বিক ধারণা (১০ শতাংশ), দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণের সক্ষমতা (১০ শতাংশ) ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা (১০ শতাংশ)।
সূচক অনুযায়ী, এসব মানদণ্ড বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্বের ‘প্রকৃত মূল্য’ বুঝতে সাহায্য করে, যা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হয়। পাঁচটি মানদণ্ডে দেশগুলোর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে বৈশ্বিক র্যাঙ্কিং করা হয়েছে।
আরও পড়ুনসবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান কে কত নম্বরে০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সেরা দশে কারানোমাড পাসপোর্ট সূচকে বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় আয়ারল্যান্ডের পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সুইজারল্যান্ড ও গ্রিস। দেশ দুটির স্কোর ১০৮ দশমিক ৫।
সেরা দশের অন্যান্য দেশ হলো যথাক্রমে পর্তুগাল, মাল্টা, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নিউজিল্যান্ড ও আইসল্যান্ড।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নিউজিল্যান্ড বাদে সেরা দশের সব কটি দেশ ইউরোপের। দেশ দুটি যৌথভাবে দশম অবস্থানে রয়েছে।
এ ছাড়া নোমাড পাসপোর্ট সূচকে যুক্তরাজ্য ২১, জাপান ৩৭, যুক্তরাষ্ট্র ৪৫, রাশিয়া ৯৫ ও চীন ১১৯তম অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুনশক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে ৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ, শীর্ষে কোন দেশ০৮ জানুয়ারি ২০২৫দক্ষিণ এশিয়ায় কে কোথায়নোমাড পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের আগে দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ রয়েছে। ৪৯ স্কোর নিয়ে ১৪০তম অবস্থান ভূটানের। ভারত রয়েছে ১৪৮তম অবস্থানে; স্কোর ৪৭ দশমিক ৫। শ্রীলঙ্কার স্কোর ৪৩ দশমিক ৫; অবস্থান ১৬৮তম। বাংলাদেশের ঠিক ওপরে ১৮০তম অবস্থানে রয়েছে নেপাল। দেশটির স্কোর ৩৯ দশমিক ৫।
অন্যদিকে নোমাড পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের ঠিক পরে ১৮২তম অবস্থানে রয়েছে মিয়ানমার। দেশটির স্কোর ৩৭ দশমিক ৫। আর পাকিস্তান ৩২ স্কোর নিয়ে রয়েছে ১৯৫তম অবস্থানে।
সূচকের সবশেষ (১৯৯তম) নাম আফগানিস্তানের। দেশটির স্কোর ২৭।
আরও পড়ুনভিসা ছাড়াই এবার বিশ্বের যে ৪২ দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা১৩ জানুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দশম ক ৫ অবস থ ন ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।