ব্যবহারকারীদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইন-ইন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে মাইক্রোসফট। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় এ মাস থেকেই মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে লগইনের জন্য পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে পাসকি। এর ফলে নতুন অ্যাকাউন্ট খুললেও আর পাসওয়ার্ড ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। পাসওয়ার্ডবিহীন এই ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে পাসওয়ার্ড ব্যবহারের দিন শেষ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, পাসওয়ার্ড দুর্বল একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা, যা সহজেই ফিশিং বা সাইবার আক্রমণের শিকার হতে পারে। আর তাই পাসওয়ার্ড এখন আর যথেষ্ট নিরাপদ নয়। বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৭ হাজার পাসওয়ার্ড-সংক্রান্ত সাইবার হামলা প্রতিহত করছে মাইক্রোসফট, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থায় অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত থাকবে পাসকির মাধ্যমে। এটি নির্দিষ্ট যন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় ব্যবহারকারীদের আঙুলের ছাপ ও চেহারা শনাক্ত করে আনলক করতে হবে। পাসওয়ার্ডের মতো এটি অনুমান করা যায় না বা চুরি হওয়ার আশঙ্কাও নেই।

আরও পড়ুনউইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা সমর্থন শেষ হচ্ছে, যা বলছে মাইক্রোসফট২৩ মার্চ ২০২৫

মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, পাসকি নিরাপদ এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহারের তুলনায় তিন গুণ দ্রুত কাজ করে। ফলে নতুন মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট খুলতে আর পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করতে হবে না। শুধু ই–মেইল ভেরিফিকেশন করলেই হবে, এরপর ব্যবহারকারীদের পাসকি সেট করতে হবে।

আরও পড়ুনমাইক্রোসফটের তৈরি প্রথম সফটওয়্যারের সোর্স কোড উন্মুক্ত করলেন বিল গেটস০৪ এপ্রিল ২০২৫

শুধু পাসকি ব্যবহার করলেই হবে না, পুরোনো পাসওয়ার্ডও মুছে দিতে হবে। পুরোনো পাসওয়ার্ডের কারণে সাইবার হামলার ঝুঁকি থেকে যাবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। আর তাই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পুরোপুরি মুছে ফেলে শুধু পাসকি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র: বিজিআর ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ড ব যবহ র র র প সওয

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ