বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামীপন্থি ৯৩ আইনজীবী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। 

রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। দুপুর ২টায় জামিনের বিষয়ে শুনানি হবে।

জামিন চাওয়া আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আবু সাইদ সাগর, আসাদুর রহমান খান রচি, সাইবার ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর পিপি নজরুল ইসলাম শামীম, মোরশেদ হোসেন শাহীন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন  বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেছি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে এ মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি হয়েছে।” 

জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে চলাকালে ৪ আগস্ট আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা, চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আওয়ামীপন্থি ১৪৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার  আদালতে মামলা করেন আইনজীবী সমিতির সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু। এ ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন ১১৫ জন। ৭ এপ্রিল অন্তর্বতী জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। জামিনের মেয়াদ শেষ হতে যাওয়ায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলেন তারা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সম্মুখ থেকে অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। 

এ সময় ভুক্তভোগী আইনজীবী মামলা শুনানি শেষে করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আসেন। তখন আসামি আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন হেলমেট পরে পিস্তল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর গুলি তাক করেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘শফীউদ্দীন সরদার সাহিত্য ও ইতিহাসের সেতুবন্ধ তৈরি করেছিলেন’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মকসুদুর রহমান বলেন, শফীউদ্দীন সরদার সাহিত্য ও ইতিহাসের সেতুবন্ধ তৈরি করেছিলেন। তাঁর লেখা প্রায় ৭০টি গ্রন্থের ২৭টিই ঐতিহাসিক উপন্যাস, যা দেশের আর কোনো লেখকের লেখায় দেখা যায় না।

শিকড়সন্ধানী সাহিত্যিক শফীউদ্দীন সরদারের ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর শহরের একটি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় অধ্যাপক মকসুদুর রহমান এ কথা বলেন। শফীউদ্দীন সরদার ফাউন্ডেশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল ওহাবের সভাপতিত্বে সভায় অধ্যাপক মকসুদুর রহমান ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও কবি নাফিউল ইসলাম, সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রধান শামীমা নার্গিস, বাংলাদেশ বেতারের নাট্যকার অধ্যাপক মোস্তফা মোহাম্মদ আবদুর রব, নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমীন তালুকদার, রবীন্দ্র সম্মিলন নাটোরের সহসভাপতি খগেন্দ্রনাথ, ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় প্রধান আলোচক অধ্যাপক মকসুদুর রহমান বলেন, শফীউদ্দীন সরদার বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। ১৯৩৫ সালের ১ মে নাটোরের হাটবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নিভৃত গ্রামে জন্ম নিয়েও তিনি দেশ-বিদেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেছেন। শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও তিনি প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ছয় বছর আদালতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর হাতে নাটোর ও রাজশাহীর খ্যাতনামা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে তিনি সারা জীবন একের পর এক গ্রন্থ লিখেছেন।

শফীউদ্দীন সরদারের লেখা ঐতিহাসিক ঔপন্যাসের মধ্যে ‘বখতিয়ারের তলোয়ার’, ‘গৌড় থেকে সোনার গাঁ’, ‘যায় বেলা অবেলায়’, ‘বিদ্রোহী জাতক’, ‘বারো পাইকার দুর্গ’, ‘প্রেম ও পূর্ণিমা’, ‘সূর্যাস্ত’ বহুল সমাদৃত। এ ছাড়া সামাজিক উপন্যাসের মধ্যে ‘শীত বসন্তের গীত’, ‘অপূর্ব অপেরা’, ‘চলনবিলের পদাবলী’, ‘থার্ড পণ্ডিত’ ও ‘মুসাফির’ উল্লেখযোগ্য। শিশুসাহিত্যের মধ্যে রয়েছে ‘ভূতের মেয়ে লীলাবতী’, ‘রাজকন্যার পোষা-পাখী’ ও ‘জ্বিনের ডিম’। এ ছাড়া ‘গাজী মণ্ডলের দল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘বন মানুষের বাসা’, ‘কাঁকড়া কেত্তন’সহ বহু নাটক লিখেছেন তিনি। বাংলাদেশ বেতারে তাঁর লেখা শতাধিক নাটক প্রচারিত হয়েছে। তিনি নিজেও নাটকে অভিনয় করতেন।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, শফীউদ্দীন সরদার কর্মজীবন শেষে বাড়িতে রাতদিন অবিরাম লিখতেন। তিনি প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন। ৮৪ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত তিনি অনেকটা নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এ কারণে তিনি যোগ্য হয়েও জাতীয় কোনো পুরস্কারে পুরস্কৃত হননি।

সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, দেশে তিনিই সবচেয়ে বেশি ঐতিহাসিক ঔপন্যাস লিখেছেন। অসাধারণ প্রতিভাসমৃদ্ধ এই লেখককে নিয়ে বহু গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই বছর পর মামলা, আসামি আওয়ামী লীগের নেতা, সাংবাদিকসহ ১৫৮ জন
  • এনসিপির বক্তব্যের জবাব দিলেন ইশরাকের আইনজীবী
  • এনসিপির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানালেন ইশরাকের আইনজীবী
  • ‘শফীউদ্দীন সরদার সাহিত্য ও ইতিহাসের সেতুবন্ধ তৈরি করেছিলেন’
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা: ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • দুদকের দুই মামলায় তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • আত্মসমর্পণের পর কারাগারে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিন