আর্থিক ব্যবস্থাপনা সবার ক্ষেত্রেই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার আয় যতই হোক, এর সঠিক ব্যবস্থাপনা জরুরি। বর্তমানে এ কাজে আপনার মুঠোফোনই হতে পারে কার্যকর একটি টুল। অ্যাপে রাখতে পারেন বড় খরচের বিল থেকে বন্ধুকে কফি খাওয়ানোর হিসাব কিংবা নেটফ্লিক্স সাবস্ক্রিপশনের ফির হিসাব। এভাবে খরচের হিসাব রেখে অ্যাপের মাধ্যমেই আপনার সম্পূর্ণ আর্থিক চিত্র তৈরি করতে পারেন। যেসব অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন:

ওয়াইএনএবি (ওয়াইএনএবি–ইউ নিড আ বাজেট)

আপনার টাকা কোথায় যাচ্ছে, তা জানতে সহায়তা করছে এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি। শূন্যভিত্তিক বাজেটিং কৌশলকে গুরুত্ব দেয় অ্যাপটি। আপনার টাকাকে একটি নির্দিষ্ট কাজে বরাদ্দ করতে হয় এই অ্যাপের মাধ্যমে, যা আপনাকে আপনার ব্যয়ের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য সরাসরি যুক্ত করা যায়। এতে ব্যাংকে কেমন টাকাপয়সা আছে, তা আপনি সরাসরি জানতে পারবেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বাজেট বিভাগ তৈরি করে এই অ্যাপে কাস্টমাইজ করার সুবিধা রয়েছে। ওয়াইএনএবি ব্যবহারকারীদের আর্থিক শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য প্রদান করে, যা তাঁদের সঠিক আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। আপনি কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থেকে আপনার বাজেট অ্যাকসেস করতে পারেন।

অ্যান্ড্রো মানি 

এক মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী এই অ্যাপ ব্যবহার করছেন। এই অ্যাপ আপনার সব খরচ সম্পর্কে তথ্য দক্ষতার সঙ্গে ট্র্যাকিং করতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড রেটিং ৪.

৬/৫ এবং অ্যাপস্টোর রেটিং ৪.৫/৫। এই অ্যাপ রিয়েলটাইম খরচ রিপোর্ট করে কোন খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় করছেন, কেমন গড় ব্যয় করছেন, তার ধারণা দেয়। নিজের খরচ ও ব্যয় পাই চার্ট, বার চার্ট ও কার্ভ চার্টে দেখার সুযোগ আছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিভাগ যোগ, বিয়োগ বা পরিবর্তন করতে পারেন।

আরও পড়ুনএক পয়সা মূলধন ছাড়াই লাখ লাখ টাকা আয় করেন এই মা-মেয়ে০৬ মার্চ ২০২৫

স্পেন্ডিং ট্র্যাকার

আরেকটি জনপ্রিয় অ্যাপ স্পেন্ডিং ট্র্যাকার। এক মিলিয়নের বেশি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী এই অ্যাপ ব্যবহার করছেন। অ্যাপটির বর্ণনায় দেখা যায়, স্পেন্ডিং ট্র্যাকার হলো অ্যাপস্টোরের সবচেয়ে সহজ ও ব্যবহারকারীবান্ধব আয়–ব্যয় ম্যানেজার অ্যাপ। এই অ্যাপ আপনার খরচ ট্র্যাকের মাধ্যমে বাজেট পরিকল্পনায় সহায়তা করে। অর্থ সঞ্চয় করার কৌশলে সহায়তা করে। অ্যান্ড্রয়েড রেটিং ৪.৬/৫ এবং অ্যাপস্টোর রেটিং ৪.৬/৫।

ওয়ালেট

আরেকটি জনপ্রিয় অ্যাপ হচ্ছে ওয়ালেট। এই অ্যাপ ১০ মিলিয়নের বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। অ্যাপের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ওয়ালেট একটি সর্বজনীন ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপক, যা আপনাকে অর্থ সঞ্চয় ও ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে খরচ ট্র্যাক করতে ও প্রতিটি টাকা (ডলার) কোথায় যাচ্ছে, তা জানতে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টকে সংযুক্ত করতে পারে। আপনার অর্থকে কার্যকরভাবে পরিচালনা ও সহায়তা করার জন্য আপনার ব্যয় ও নগদ আয় সম্পর্কে ধারণা দেয় এই অ্যাপ। ওয়ালেট আপনাকে আপনার অর্থ আপনার মতো করে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময়। অ্যান্ড্রয়েড রেটিং ৪.৮/৫ এবং অ্যাপস্টোর রেটিং ৪.৬।

আরও পড়ুনখাবারের অপচয় ও ব্যয় কমাবেন যেভাবে১১ মার্চ ২০২৪

পকেটগার্ড

এই অ্যাপ প্রায় এক লাখের বেশি বার ডাউনলোড হতে দেখা যায়। পকেটগার্ড অ্যাপের বর্ণনায় বলা হচ্ছে, এই অ্যাপ আপনার বাজেট ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার পূর্ণাঙ্গ অ্যাপ। পকেটগার্ড আপনার ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাকে সহজ করার জন্য ও উন্নত অ্যালগরিদমের সাহায্যে আপনার আর্থিক যাত্রাকে পরিবর্তন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই অ্যাপ বাজেটকে সহজ ও সাবলীল করে তুলছে। আপনাকে আপনার আর্থিক ক্ষমতায় নিয়ন্ত্রণ নিতে সুযোগ দিচ্ছে এই অ্যাপ।

ইনটুইট ক্রেডিট কার্মা

এই অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড প্লে স্টোরে ৫০ মিলিয়নের বেশি বার ডাউনলোড হতে দেখা যায়। অ্যাপের মাধ্যমে নিজের মাসিক খরচের ওপর নজর রাখতে পারেন। প্লে স্টোরের রেটিং ৪.৮/৫ এবং অ্যাপস্টোরের রেটিং ৪.৮/৫।

সূত্র: ফোর্বস ম্যাগাজিন

আরও পড়ুনঅনলাইনে যে ৫টি কাজ করে আয় করতে পারেন২২ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই অ য প র আপন র ব য ব যবহ র আর থ ক খরচ র আপন ক করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।

আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।

দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।

পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ