‘বাড়িতে সবকিছু ছিল, তবু সুখী ছিলেন না বিনোদন খান্না’
Published: 7th, April 2025 GMT
বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা বিনোদন খান্না। ছোট চরিত্র দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে মানুষের মুঠো মুঠো ভালোবাসা কুড়াতে থাকেন। তারপর প্রধান চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এক জীবনে অর্থ, যশ-খ্যাতি সবই পেয়েছেন। দুঃখজনক ব্যাপার হলো— ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী ছিলেন এই তারকা শিল্পী।
রুপালি জগতের হলেও বিনোদ খান্না অত্যন্ত আধ্যাত্মিক মানুষ ছিলেন। তাই ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকা অবস্থায় প্রয়াত আধ্যাত্মিক গুরু ওশো রজনীশের অনুসারী হয়ে ওঠেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনে অবস্থিত আধ্যাত্মিক গুরু রজনীশপুরমেও চলে যেতেন বিনোদ। আর এসব তথ্য জানিয়েছেন ওশো রজনীশের ব্যক্তিগত সহকারী মা আনন্দ শীলা।
সুইজারল্যান্ডের নাগরিক মা আনন্দ শীলা। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত রজনীশপুরম আশ্রম দেখাশোনা করেন তিনি। ফলে বিনোদ খান্নাকে কাছ থেকে দেখেছেন। পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পঁচাত্তরের শীলা বলেন, “বিনোদ খান্নার স্টারডম আমাকে প্রভাবিত করেনি। তাকে অন্য সন্ন্যাসীদের মতোই দেখেছি।”
বিনোদন খান্নার সবকিছু থাকার পরও আশ্রমে কী খুঁজছিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে শীলা বলেন, “আমি জানি, তার বাড়িতে সবকিছু ছিল। কিন্তু তিনি সুখী ছিলেন না। তার মধ্যে মদ্যপান করতেন। অসুখী এবং মদ্যপান— এ দুটো খুবই খারাপ ব্যাপার।”
বিনোদন ব্যক্তিগত জীবনে কেন অসুখী ছিলেন, তার খানিকটা ব্যাখ্যা দিয়ে শীলা বলেন, “পৃথিবীতে বৈবাহিক সমস্যা খুবই প্রচলিত ব্যাপার। এটি গড়তেও পারে, ভাঙতেও পারে। আমি যতটা বুঝতে পেরেছি, এটাই ছিল তার মূল সংগ্রাম।”
তবে বিনোদন খান্না যা খুঁজতে আশ্রমে যেতেন, সর্বশেষ তা পেয়েছিলেন কিনা তা জানেন না শীলা। তার ভাষায়— “এ বিষয়ে আমি কখনো বিনোদ খান্নার সঙ্গে কথা বলিনি।”
ষাটের দশকের শেষ লগ্নে রুপালি জগতে পা রাখেন বিনোদ খান্না। ১৯৭১ সালে গীতাঞ্জলি তালেয়ার খান্নার সঙ্গে প্রথম বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বিনোদ। এ সংসারে জন্ম নেয় অভিনেতা অক্ষয় ও রাহুল খান্না। ১৯৮৫ সালে গীতাঞ্জলির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে বিনোদ খান্নার।
১৯৯০ সালে শিল্পপতি শরায়ুর কন্যা কবিতাকে বিয়ে করেন বিনোদ খান্না। এ সংসারে একটি কন্যা ও একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ দিন লড়াই করে ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল ৭০ বছর বয়সে মারা যান বিনোদ খান্না।
বিনোদন খান্না অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো— ম্যায় তুলসি তেরে আঙ্গন কি, কুরবানি, খুন পাসিনা, মেরে আপনে, চাঁদনি, সত্যমেব জয়তে, পারবারিশ, মুকাদ্দার কা সিকান্দার, মেরা গাঁও মেরা দেশ, অমর আকবর অ্যান্থনি প্রমুখ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এপ্রিলে ডেঙ্গু রোগী মার্চের দ্বিগুণ
চলতি বছরের মার্চ মাসের চেয়ে সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিলে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি ছিল। গত চার মাসে দেশে যে পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, গত বছরের প্রথম চার মাসে তা হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসেও ডেঙ্গুতে এত আক্রান্ত রোগী ছিলেন না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ মার্চ মাসে করা জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে বাড়লেও ডেঙ্গুর শূককীট বা লার্ভার পরিমাণ বেশ কমেছে আগের জরিপের সময়ের চেয়ে। তবে এপ্রিল মাসে দেশজুড়ে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি লার্ভার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলতি মে মাসেও এমন ধারার বৃষ্টির প্রবণতা আছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা। তাঁদের কথা, যদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কমে যায়। মৃত্যুর সংখ্যাও তেমন হারেই কমে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।
সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭০১। মার্চ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৩৩৬।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের সঙ্গে এ বছরের তুলনা করলে দেখা যায়, এবার প্রতি মাসে আগের বছরের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০৪ জন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন যথাক্রমে ১ হাজার ৫৫, ৩৩৯ ও ৩১১ জন। এবার এই ৩ মাসে রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ১৬১, ৩৭৪ ও ৩৩৬।
এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেননিছক সংখ্যা দিয়ে রোগের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করা যায় না, এমন কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংখ্যা নিঃসন্দেহে কিছু ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।’