ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৯ জন মারা গেছেন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
Published: 7th, April 2025 GMT
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ১১ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৯ জন নিহত হয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ২২ দশমিক ৬৩ জন মারা গেছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, এ সংখ্যা গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম। যদিও গত বছর ১৫ দিনের হিসেব বিবেচনায় নেওয়া হয়। বরাবরের মতো এবারও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেশি।
আজ সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ঈদযাত্রার সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন–সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোড সেফটি জানিয়েছে, এবারের ঈদুল ফিতরে ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ২৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায আহতের সংখ্যা ৫৫৩। তারা ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
সংগঠনটি বলছে, আহতের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি হবে। ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই ঈদের ২ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৭১ জন। যাঁদের অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত।
তাদের হিসাবে, ২০২৪ সালে ১৫ দিনে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছিলেন। তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ২৪ দশমিক ৪৬ জন, যা এ বছরের বছরের তুলনায় প্রাণহানি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম।
চলতি বছরেও মোটরসাইকলে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেশি। এবার ১১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।
সড়ক ছাড়াও ঈদের সময়ে ৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৫ আহত হয়েছেন। ১৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন।
মোটরসাইকেলের পর ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ নিহত থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান)। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি ৩৮ দশমিক ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপর আছে মুখোমুখি সংঘর্ষ।
ঈদযাত্রায় বিকেলে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর আছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল এবং সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। তবে একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকায় ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি বলেছে, এবার ঈদে রাজধানী থেকে অন্তত ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাত্রা করেছেন এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৪ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছেন। ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকা, অনুকূল আবহাওয়া, বিভিন্ন সড়কের অবস্থা ভালো থাকা এবং সরকারের ব্যাপক তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা স্বস্তিকর ছিল। যদিও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছিল।
রোড সেফটি বলেছে, ঈদ উদ্যাপনের জন্য মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে পরিবহনসেবা দেওয়ার মতো মানসম্পন্ন নিরাপদ গণপরিবহন দেশে নেই। ফলে মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে গন্তব্যে যাত্রা করেন এবং দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। পাশাপাশি দায়িত্বহীনতা ও অসচেতনতার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে হলে অন্তত ৩ বছরের একটি মধ্যমেয়াদি টেকসই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে রেলব্যবস্থার সম্প্রসারণ, নদীপথকে জনবান্ধব করা এবং বিআরটিসির রুট ও বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোশাকশ্রমিকদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া সড়ক ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন য় ত হয় ছ ন ঈদয ত র সবচ য় বছর র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক কৃষকের মরিচখেতে একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান তাঁর মরিচখেতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ওই গ্রেনেড পান। বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপর বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশকে জানানো হয়।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মখলিছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড সাদৃশ্য ওই বস্তু দেখতে পায়। এরপর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় থাকা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ঘটনাটি জানানো হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে লেফটেন্যান্ট আল হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে প্রথমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। চারপাশের মাটি গর্ত হয়ে যায়।
সেনা কর্মকর্তা আল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেনেডটি বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে ১০০ বছরের কমবেশি সময়ে সক্রিয় থাকে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উচিত ছিল আগেই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো। এটি বিস্ফোরিত হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতে পারত।