ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ১১ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৯ জন নিহত হয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ২২ দশমিক ৬৩ জন মারা গেছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, এ সংখ্যা গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম। যদিও গত বছর ১৫ দিনের হিসেব বিবেচনায় নেওয়া হয়। বরাবরের মতো এবারও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেশি।

আজ সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ঈদযাত্রার সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন–সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রোড সেফটি জানিয়েছে, এবারের ঈদুল ফিতরে ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ২৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায আহতের সংখ্যা ৫৫৩। তারা ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

সংগঠনটি বলছে, আহতের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি হবে। ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই ঈদের ২ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৭১ জন। যাঁদের অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত।

তাদের হিসাবে, ২০২৪ সালে ১৫ দিনে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছিলেন। তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ২৪ দশমিক ৪৬ জন, যা এ বছরের বছরের তুলনায় প্রাণহানি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম।

চলতি বছরেও মোটরসাইকলে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেশি। এবার ১১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।

সড়ক ছাড়াও ঈদের সময়ে ৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৫ আহত হয়েছেন। ১৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন।

মোটরসাইকেলের পর ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ নিহত থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান)। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি ৩৮ দশমিক ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপর আছে মুখোমুখি সংঘর্ষ।

ঈদযাত্রায় বিকেলে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর আছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল এবং সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। তবে একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকায় ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছেন।

রোড সেফটি বলেছে, এবার ঈদে রাজধানী থেকে অন্তত ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাত্রা করেছেন এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৪ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছেন। ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকা, অনুকূল আবহাওয়া, বিভিন্ন সড়কের অবস্থা ভালো থাকা এবং সরকারের ব্যাপক তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা স্বস্তিকর ছিল। যদিও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছিল।

রোড সেফটি বলেছে, ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে পরিবহনসেবা দেওয়ার মতো মানসম্পন্ন নিরাপদ গণপরিবহন দেশে নেই। ফলে মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে গন্তব্যে যাত্রা করেন এবং দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। পাশাপাশি দায়িত্বহীনতা ও অসচেতনতার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে হলে অন্তত ৩ বছরের একটি মধ্যমেয়াদি টেকসই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে রেলব্যবস্থার সম্প্রসারণ, নদীপথকে জনবান্ধব করা এবং বিআরটিসির রুট ও বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোশাকশ্রমিকদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া সড়ক ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন য় ত হয় ছ ন ঈদয ত র সবচ য় বছর র দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা