গলগণ্ড হলে কি থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলে দিতে হয়
Published: 7th, April 2025 GMT
থাইরয়েড আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান গ্রন্থি। গলার সামনের দিকে প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থিটিই থাইরয়েড। মানুষের বৃদ্ধি, বিকাশ, শারীরবৃত্তিক আর বিপাকীয় নানা ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সাধন করার জন্য এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরয়েড হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোনো কারণে থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে বড় হয়ে গেলে এবং গলার সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠলে আমরা বলি গলগণ্ড। থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো: থাইরয়েডের প্রদাহ, নডিউল বা টিউমার, সিস্ট ও থাইরয়েড ক্যানসার। থাইরয়েড ফুলে গেলে অনেক রোগী আতঙ্কিত হয়ে ভাবেন, গ্রন্থিটি কি কেটে ফেলে দিতে হবে! বেশির ভাগ ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলে দিতে হয় না। খুব কম কিছু ক্ষেত্রেই এটির অস্ত্রোপচার করার দরকার পড়ে। জেনে নিন কোন কোন ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলে দিতে হয়:
১.
২. টক্সিক মাল্টিনডিউলার গয়টার: এ ক্ষেত্রেও প্রথম চিকিৎসা অস্ত্রোপচার নয়। মুখে খাওয়ার ওষুধ এবং রেডিও আয়োডিন থেরাপি রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অস্ত্রোপচার করা হয়।
৩. ক্যানসার নয়, এমন কোনো টিউমার কিন্তু আকার এত বড় যে শ্বাসনালি বা খাদ্যনালিতে চাপ প্রয়োগ করছে, সেগুলো ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
৪. ফলিকুলার অ্যাডেনোমা অ-ক্যানসারযুক্ত টিউমার হলেও ক্যানসার শনাক্তকারী পরীক্ষার মাধ্যমে এর ক্যানসার ও সাধারণ টিউমারের মধ্যে পার্থক্য করা যায় না। সে জন্য এ ধরনের টিউমার অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়াই শ্রেয়।
৫. থাইরয়েডের সাধারণ কোনো টিউমার বা নডিউলও যদি হঠাৎ খুব দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে, তাহলে অস্ত্রোপচার করে ফেলাই শ্রেয়।
৬. ওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি বাহ্যিক সৌন্দর্য বিবেচনায় টিউমারের কারণে রোগী বিব্রত বোধ করলে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে।
ক্যানসার ব্যতীত বেশির ভাগ অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেই পুরো থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলতে হয় না। শুধু টিউমার ফেলা হয়। এসব রোগীর অস্ত্রোপচার–পরবর্তী জীবনে থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।
ডা. অঞ্জনা সাহা, হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা
আরও পড়ুনথাইরয়েড নিয়ে ৫টি ভ্রান্ত ধারণা২০ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।
ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।
অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।
ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়