থাইরয়েড আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান গ্রন্থি। গলার সামনের দিকে প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থিটিই থাইরয়েড। মানুষের বৃদ্ধি, বিকাশ, শারীরবৃত্তিক আর বিপাকীয় নানা ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সাধন করার জন্য এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরয়েড হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কোনো কারণে থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে বড় হয়ে গেলে এবং গলার সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠলে আমরা বলি গলগণ্ড। থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো: থাইরয়েডের প্রদাহ, নডিউল বা টিউমার, সিস্ট ও থাইরয়েড ক্যানসার। থাইরয়েড ফুলে গেলে অনেক রোগী আতঙ্কিত হয়ে ভাবেন, গ্রন্থিটি কি কেটে ফেলে দিতে হবে! বেশির ভাগ ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলে দিতে হয় না। খুব কম কিছু ক্ষেত্রেই এটির অস্ত্রোপচার করার দরকার পড়ে। জেনে নিন কোন কোন ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলে দিতে হয়:

১.

যদি কোনো টিউমার বা নডিউলে ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে বা ক্যানসার শনাক্ত হয় (থাইরয়েডের বেশির ভাগ ক্যানসারই সুচিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়)।

২. টক্সিক মাল্টিনডিউলার গয়টার: এ ক্ষেত্রেও প্রথম চিকিৎসা অস্ত্রোপচার নয়। মুখে খাওয়ার ওষুধ এবং রেডিও আয়োডিন থেরাপি রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অস্ত্রোপচার করা হয়।

৩. ক্যানসার নয়, এমন কোনো টিউমার কিন্তু আকার এত বড় যে শ্বাসনালি বা খাদ্যনালিতে চাপ প্রয়োগ করছে, সেগুলো ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

৪. ফলিকুলার অ্যাডেনোমা অ-ক্যানসারযুক্ত টিউমার হলেও ক্যানসার শনাক্তকারী পরীক্ষার মাধ্যমে এর ক্যানসার ও সাধারণ টিউমারের মধ্যে পার্থক্য করা যায় না। সে জন্য এ ধরনের টিউমার অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়াই শ্রেয়।

৫. থাইরয়েডের সাধারণ কোনো টিউমার বা নডিউলও যদি হঠাৎ খুব দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে, তাহলে অস্ত্রোপচার করে ফেলাই শ্রেয়।

৬. ওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি বাহ্যিক সৌন্দর্য বিবেচনায় টিউমারের কারণে রোগী বিব্রত বোধ করলে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে।

ক্যানসার ব্যতীত বেশির ভাগ অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেই পুরো থাইরয়েড গ্রন্থি ফেলতে হয় না। শুধু টিউমার ফেলা হয়। এসব রোগীর অস্ত্রোপচার–পরবর্তী জীবনে থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।

ডা. অঞ্জনা সাহা, হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা

আরও পড়ুনথাইরয়েড নিয়ে ৫টি ভ্রান্ত ধারণা২০ ডিসেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ