আসছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের নতুন দিনটি বরণ করে নিতে বাঙালিয়ানা পোশাকের সঙ্গে চলে খাবারের রকমারি আয়োজন। পহেলা বৈশাখে ঘরে তৈরি করতে পারেন এমন কয়েক পদ খাবারের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মিতা আজহার ও আফরোজা খানম মুক্তা
ইলিশ মাসালা
উপকরণ: ইলিশ মাছ ৪ টুকরা, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, টকদই ২ টেবিল চামচ, চিনি সামান্য, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, কাঁচামরিচ ৪টি, তেল আধা কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছ ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তেল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ বাদে সব উপকরণ দিয়ে মাছ ম্যারিনেট করে রেখে দিন আধা ঘণ্টা। এবার চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে তেল দিন, গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে ম্যারিনেট করা মাছ দিয়ে রান্না করুন। উল্টে দিন, আধা কাপ পানি দিন, কাঁচামরিচ ফালি করে দিন, তেল ওপরে ভেসে এলে নামিয়ে নিন। ভাত ও পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার ইলিশ মাসালা।
কাঁচা আমে টেংরা মাছের ঝোল
উপকরণ: টেংরা মাছ ১০টি, কাঁচা আম ২টি, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া সামান্য, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়া সামান্য, পাঁচফোড়ন গুঁড়া চা চামচের চার ভাগের ১ ভাগ, কাঁচামরিচ ২/৩টি, লবণ স্বাদমতো, তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছ কেটে ধুয়ে নিন। আম কেটে ফালি করে নিন। ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে গরম হলে রসুন কুচি দিয়ে বাদামি রং করে ভেজে অল্প একটু পানি দিয়ে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে নেড়েচেড়ে দিন। এবার পাঁচ ফোড়ন গুঁড়া ও কাঁচামরিচ বাদে একে একে বাকি সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে পানি দিয়ে ঝোল ঝোল করে রান্না করুন। পাঁচ ফোড়ন গুঁড়া ও কাঁচামরিচ ফালি দিয়ে দিন। এভাবে তৈরি করে নেন কাঁচা আমে টেংরা মাছের ঝোল।
রসগোল্লা
উপকরণ: ১.
প্রণালি: ১ লিটার তরল দুধ ফুটে উঠলে টক দই বা লেবুর রস বা সিরকা দিয়ে ছানা তৈরি করে নিন। পরে চালনিতে পাতলা কাপড় রেখে ৩০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ছানা, সুজি, ময়দা, চিনি, এলাচ গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে হাতে তেল মাখিয়ে ১৬টি ভাগ করে মিষ্টি বা বল বানিয়ে নিন। চিনি, পানি একসঙ্গে জাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে। সিরা ফুটে উঠলে সব মিষ্টি ছেড়ে চুলার তাপ বাড়িয়ে ১০ মিনিট ঢাকনাসহ রান্না করুন। পরে চুলার তাপ মিডিয়াম করে ঢাকনাসহ ২০ মিনিট রান্না করুন। চুলা থেকে নামিয়ে সিরার ভেতর ৮-১০ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল রসগোল্লা।
শুঁটকি ভর্তা
উপকরণ: টেংরা, পুঁটি, ছোট মাছের শুঁটকি ১ কাপ, পেঁয়াজ টুকরো করে কাটা ২টি, রসুনের কোয়া
৬/৭টি, কাঁচামরিচ ৭/৮টি, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে রসুন, পেঁয়াজ একটু ভেজে নিন। এবার কাঁচামরিচ দিয়ে ভেজে উঠিয়ে নিন। ওই প্যানে শুঁটকি ভেজে নিন। লবণ দিয়ে পাটায় বেটে অথবা ব্ল্যান্ডারে অল্প সময় ব্ল্যান্ড করে নিন। তৈরি হয়ে গেল শুঁটকি ভর্তা। ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার ঝাল ঝাল শুঁটকি ভর্তা।
নারকেলের নাড়ু
উপকরণ: নারিকেল ২টা, গুড় বা চিনি ১ কাপ, এলাচ ও দারচিনি ২/৩ পিস করে, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, মুড়ি বা চাল ভাজা গুঁড়া আধা কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে নারকেল কুরিয়ে নিতে হবে। কোরানো নারকেল, গুড়, চিনি, এলাচ ও দারচিনি একসঙ্গে মাখিয়ে ঘণ্টাখানেক রেখে দিন। পরে চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে নারকেলের মিশ্রণ দিয়ে নাড়াচাড়া করে এমন অবস্থায় নামাতে হবে যেন নারকেল ও গুড় বা চিনি আঠালো হয়ে আসে। পরে গুঁড়া দুধ ও মুড়ি বা চাল ভাজা গুঁড়ো দিয়ে আবারও নেড়ে নামিয়ে নিন। হাতে ঘি মাখিয়ে গরম গরম গোল করে নাড়ু বানিয়ে মুড়ির গুঁড়োয় গড়িয়ে মাখিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল নারকেলের নাড়ু।
শজিনা ডাঁটায় মসুর ডাল
উপকরণ: শজিনা ডাঁটা ১ আঁটি, মসুর ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২টি, রসুন কুচি ১ টেবিলে চামচ, কাঁচামরিচ ৪/৫ টি, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ৩ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: শজিনা ডাঁটা টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ধুয়ে নিন। এবার চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে তেল দিন, গরম হলে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে বাদামি রং হলে শজিনা দিয়ে মসুর ডালসহ একে একে বাকি উপকরণ দিয়ে কষিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিন, শজিনা ডাঁটা ও ডাল সেদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে খেতে মজা শজিনা ডাঁটার মসুর ডাল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ খ উৎসব লবণ স ব দমত
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা
মানজু রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক ব্যতিক্রমধর্মী খাবার আয়োজন, যেখানে দেশি স্বাদের সাথে ছিল আন্তর্জাতিক রান্নার কৌশল ও উপকরণ। আয়োজনে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রন্ধনশিল্পী ইনারা জামাল, যিনি ফুড স্টাডিজে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন, নিউইয়র্ক থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
ইনারা জামাল বলেন, ‘খাবার শুধু স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। আমি চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভিন্ন দেশের উপকরণ ও কৌশলের সঙ্গে মিশিয়ে বিশ্বদরবারে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে। সৃজনশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাবারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। একইসঙ্গে, তার লক্ষ্য বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গবেষণার আলোয় তুলে ধরা, যেন এই সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারে তিনি সবসময় প্রাধান্য দেন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান এবং টেকসই উপস্থাপনাকে।
এই আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে রন্ধনশিল্পী মালিহার বাহারি পরিবেশনা, যেখানে দেশি উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নানান স্বাদের সুস্বাদু খাবার।
আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং ভোজনরসিকদের সামনে এক নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পরিবেশনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দেন।