বৈশাখের প্রথম দিনে শুরু হয় বাংলা নতুন বছরের উৎসবমুখর যাত্রা। বাংলা নতুন বছর বরণ করে নেওয়া বাঙালির কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ উৎসব ঘিরে বাঙালির ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রায় সবার মাঝেই লক্ষ্য করা যায় ভিন্ন ধাঁচের সাজসজ্জার আয়োজন। বিশেষ করে নারীর মাঝে দেখা যায় ভিন্ন আঙ্গিকের সাজের বাহার।
বৈশাখের সাজ নিয়ে জারা’স বিউটি লাউঞ্জের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের সাজে সবাই চায় শতভাগ বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলে নিজেকে নতুনভাবে দেখতে। গরম আবহাওয়ার কথা ভেবে এমনভাবে ফেস মেকআপ করতে হবে, যাতে মেকআপ হালকা হওয়ার পাশাপাশি তা যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই প্রথমেই যা করতে হবে তা হলো স্কিন মেকআপের উপযোগী করে নেওয়া।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে মুখ পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশ, আইস কিউব দিয়ে ফেস ভালোভাবে সেট করতে হবে। তারপর একটি ভালো মানের টোনার দিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে গরমে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। শরীরের যে জায়গাগুলো এক্সপোজার থাকবে, সেগুলোতে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। মেকআপ গরমে সব সময় হালকা হওয়া প্রয়োজন।
রুমি বলেন, ‘মেকআপ হালকা রাখার জন্য প্রথমে প্রাইমার অ্যাপ্লাই করে নেওয়া প্রয়োজন। এরপর লাইটওয়েট ফাউন্ডেশন অথবা ওয়াটার রেসিস্ট্যান্স ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যায়, তাহলে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হয়। চাইলে ভালো মানের ক্রিম লাগিয়ে নিতে পারেন, এতে একটা হালকা বেজ তৈরি হবে। মুখে যে জায়গাগুলো আনইভেন থাকে, সেই জায়গাগুলো ইভেন করার জন্য ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার পর কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। তারপর পুরো জিনিস পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে হবে। কারণ, প্রচণ্ড গরমে পাউডার দিয়ে সেট না করলে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এরপর সেটিংস স্প্রে ব্যবহার করতে হবে; যাতে মেকআপ অনেকক্ষণ থাকে। এর ফলে পহেলা বৈশাখের একটা সুন্দর অবয়ব তৈরি করা যাবে।
চোখের মেকআপের ব্যাপারে এই রূপ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘একটি লাইট বেজের ওপর চোখে মেকআপ করা যায়। চোখের হালকা মেকআপের জন্য কনসিলার ব্যবহার করে হালকা সেট করে নিতে হবে। যেহেতু এটা বাঙালি লুক তাই অনেকে কাজল পছন্দ করেন। কাজল যদি ব্ল্যাক আইশ্যাডো দিয়ে সেট করা হয় তাহলে সুন্দর দেখাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চোখের সাজে আধুনিক ভাব আনতে দিতে পারেন বিভিন্ন কালারের কাজল বা আইলাইনার। যাদের চোখ ছোট, চাইলে লাইনারের সঙ্গে ওয়াটার লাইনে সাদা বা নুড কালারের কাজল দিতে পারেন। এতে চোখ বড় দেখাবে।’
রুমি জানান, দিনের বেলায় হালকা লিপস্টিক এবং রাতে মেরুন বা হালকা লাল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে বৈশাখের সাজ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে। সঙ্গে কপালে ছোট বা বড় টিপ পরা যায়। এতে করে ট্র্যাডিশনাল লুক ফুটে উঠবে।
এখন যেহেতু আবহাওয়া গরম তাই শাড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুলে খোঁপা করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি। তিনি জানান, সামনে সিঁথি কেটে হালকা পাফ করে সেট করে পেছনে খোঁপা করতে পারেন অথবা সামনে ফ্রেঞ্চ বেণি করে পনি টেইল কিংবা মেসি বান করতে পারেন চুলে। তাঁর মতে, এখন যেহেতু চুল কার্ল করার একটা ট্রেন্ড চলছে, চাইলে একটু ফ্রন্ট সেটিং করে পেছনের চুলগুলো হালকা কার্ল করে ছেড়ে রাখা যেতে পারে। চাইলে চুলে কাঁচা ফুল পরা যায়। এতে আরও বেশি সুন্দর দেখাবে।
নববর্ষের উৎসবে নিজেকে সাজাতে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন গহনাও। এ প্রসঙ্গে রুমি বলেন, ‘বৈশাখে মাটির গহনার প্রচলন সেই শুরু থেকেই। বৈশাখের সাজকে মাটির গহনা আরও বেশি ইউনিক করে তোলে। এ ছাড়া পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অ্যান্টিক জুয়েলারি পরতে পারেন। এতে বাঙালিয়ানা ব্যাপারটা আরও বেশি ফুটে উঠবে।’ v
ছবি সৌজন্য: হরিতকী
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ খ উৎসব ব যবহ র কর স ট কর ম কআপ আরও ব
এছাড়াও পড়ুন:
৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি।