দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন শ্রেণিতে দেশের চার প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো বিকাশ লিমিটেড, ফেব্রিক লাগবে লিমিটেড, ওয়ালটন ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে আজ বুধবার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার বা সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডার আয়োজনে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদেশি বিনিয়োগ শ্রেণিতে এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। আর ইনোভেশন শ্রেণিতে ফেব্রিক লাগবে লিমিটেড, এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল ও গভর্ন্যান্স শ্রেণিতে ওয়ালটন ও ইনভেস্টমেন্ট এক্সিলেন্স শ্রেণিতে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। বিকাশের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর, ফেব্রিক লাগবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী নাজমুল ইসলাম, ওয়ালটনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির টেকনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক এরিক চৌধুরী পুরস্কার গ্রহণ করেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

চার বন্ধুর হাত ধরে ১৯৫৮ সালে পাবনার আতাইকুলায় যাত্রা শুরু করে স্কয়ার ফার্মা। শুরুতে সাধারণ সর্দি-কাশির সিরাপ বানিয়ে হাতেখড়ি। সেই স্কয়ার এখন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহু আগেই নিজেদের পণ্য ভিনদেশে নিয়ে গেছে তারা। দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি স্কয়ার ফার্মা।

বিকাশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এনে দেশের অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি টেকসই প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্ভাবন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ বিকাশকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানি ইন মোশন এলএলসি, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি), বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, চায়নার আলিবাবা গ্রুপের অ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ও জাপানের সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিকাশ। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত আর্থিক লেনদেন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে বিকাশ।

দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ইলেকট্রনিকস খাতে দেশীয় জায়ান্ট কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ৮০০ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ওয়ালটনের কারখানায় বর্তমানে কাজ করেন ৩৫ হাজারের বেশি লোক। গত বছর কোম্পানিটি ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ৪০টির বেশি দেশে ওয়ালটনের পণ্য রপ্তানি হয়।

ফেব্রিক লাগবে ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করে। এটি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। উৎপাদক ও ক্রেতার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রিতে ভূমিকা রাখে প্রতিষ্ঠানটি। প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁতিদের উৎপাদিত পণ্য আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। আবার তাঁতিদের পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল সংগ্রহও করা যায় এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, থ্রি–পিস, সুতাসহ প্রায় ৪০ ধরনের পণ্যের হাতবদল হয় এই প্ল্যাটফর্মে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর থ ক প রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ