ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তে অশান্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি, দাবি উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগেরও। কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিনই এ নিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে। আজ ন্যায়বিচার চেয়ে কলকাতায় এক বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং এর মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষকের চাকরিকে অবৈধ ঘোষণা করে চাকরি বাতিলের আদেশ দেন। এ রায় ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের সামনে শুরু হয় চাকরিহারাদের অবস্থান ধর্মঘট ও অনশন।

ন্যায়বিচার চেয়ে বুধবার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বিশাল এক মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বউবাজার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে শেষ হয়। এদিন সল্টলেকের প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কাছে ফুটপাতে চাকরিহারা শিক্ষকেরা অবস্থান ধর্মঘটে বসেন। এ সময় তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে চাকরির নিয়োগে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করে যোগ্যদের চাকরি নিশ্চিত করার দাবিও তোলেন তাঁরা।

ধর্মঘটে বসা শিক্ষকেরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঘুষ–বাণিজ্যের শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলেন। এ সময় তাঁরা ১৮ হাজার যোগ্য প্রার্থীর চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের পৃথক তালিকা আদালতে জমা দেয়নি। ফলে আদালত একযোগে সবার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে আছেন।

তবে এবার আন্দোলনকারীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগ চেয়েছেন। তাঁদের দাবি, মমতার দলের অতিলোভের কারণেই ঘুষের বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে এবং যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি শূন্য পাওয়া প্রার্থীদের খাতা ঘষামাজা করে চাকরি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও করেছেন চাকরিহারা এসব শিক্ষক।

এসব দুর্নীতির অভিযোগের দায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘাড়ে চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের পাশে থাকবেন তিনি।

এদিকে চাকরিহারা ও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা ‘বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্যমঞ্চ’ নামে একটি নতুন সংগঠন গঠন করেছেন। গত শনিবার বিকেলে কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা জানান, চাকরি বাতিলের সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিতে হবে। তাঁরা অভিযোগ করেন, ১০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী চাকরির নামে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন দ য প ধ য য় ম খ যমন ত র দ র চ কর চ কর হ র কলক ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আবার ‘লাস্ট মিনিট শো’, জন্মদিনের রাতে স্লটকে জয় উপহার ফন ডাইকের

লিভারপুল ৩–২ আতলেতিকো মাদ্রিদ

জন্মদিনের রাতে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!

রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই মাঠে ঢুকে পড়লেন আর্নে স্লট। লিভারপুলের সমর্থকেরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থাকলেন, দল জেতায় অভিনন্দনও জানালেন। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে হাত নেড়ে স্লট সেই অভিবাদনের জবাব দিলেন।   

ভার্জিল ফন ডাইকের সঙ্গে আলিঙ্গনের সময় স্লটকে একটু বেশিই খুশি মনে হলো। কারণ, লিভারপুল অধিনায়ক ফন ডাইক ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত না হলে তাঁর বিশেষ রাতটা যে অনেকটাই পানসে হয়ে যেত!

২০২৫–২৬ মৌসুমে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল করাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে লিভারপুল। যেটিকে বলা হচ্ছে লাস্ট মিনিট শো, কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম দিয়েছে স্লট টাইম।

এবার সেই শো–এর নায়ক ফন ডাইক। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে তাঁর হেডারেই আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্রয়ের পথে থাকা ম্যাচটা ৩–২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে শুভসূচনা করল লিভারপুল।

এ নিয়ে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল লিভারপুল। সবকটি ম্যাচে অলরেডরা জয়সূচক গোল করল ৮০ মিনিটের পর; এর তিনটিই যোগ করা সময়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ