ম্যানসিটির ফুটবলারদের ‘সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তি’ অভাব
Published: 12th, April 2025 GMT
সবশেষ সাত মৌসুমে ছয়বার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএল) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। সেই ক্লাবটাই এবার লিগ পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ নম্বরে। ক্লাবটির তারকা মিডফিল্ডার ইলকায় গুন্দোয়ানের ধারনা ম্যানসিটির এই মৌসুমে ভোগান্তির অন্যতম কারণ হলো আকাঙ্ক্ষার অভাব, যা তাদের পরপর চারটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ে সহায়তা করেছিল।
গুন্দোয়ান স্বীকার করেছেন, রদ্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ইনজুরি অবশ্যই প্রভাব ফেলেছে ম্যানসিটির চলমান মৌসুমের পারফরম্যান্সে। তবে দলের মধ্যে আগের মতো ‘দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তি’ না থাকার ব্যাপারটাও ইঙ্গিত করেছেন এই জার্মান মিডফিল্ডার।
ইএসপিএনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গুন্দোয়ান বলেন, “আমার মনে হয়, অনেক ম্যাচে আমরা কখনো কখনো কৌশলে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছি। নিজেদের আচরণগুলোতে বেশি মনোযোগ দিইনি। দৃঢ় সংকল্প, ইচ্ছাশক্তি, আগ্রাসন, এগুলো খুবই সাধারণ বিষয়, যা খেলার অংশ। কিন্তু কখনো কখনো আপনি শুধুই নিজের অবস্থান বা পরিকল্পনা নিয়ে এতটাই ভাবেন যে এসব সাধারণ ব্যাপার ভুলে যান বা উপেক্ষা করেন, যেগুলো স্বাভাবিক ভাবেই থাকা উচিত।”
আরো পড়ুন:
ডার্বি ড্র করে ইউনাইটেড সমর্থকদের ‘ক্লাসলেস’ বললেন গার্দিওলা
ডার্বির আগে আমোরিমের চোখ ইউনাইটেডের উন্নতিতে
নভেম্বর ও ডিসেম্বরের বাজে পারফরম্যান্সের ফলে সিটি শিরোপা দৌড় থেকে ছিটকে পড়ে। তবে তারা ধীরে ধীরে নিজেদের আবার গুছিয়ে নিচ্ছে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ চার ম্যাচে অপরাজিত সিটি। এখন তাদের হাতে ইপিএলে সাতটি ম্যাচ বাকি। যেখানে ভালো পারফরম্যান্সের ভিত্তিতি শীর্ষ পাঁচে থেকে পরের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ পেতে পারে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) তারা ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে খেলবে। গুন্দোয়ান জানান, মার্চের শেষ দিকে বোর্নমাউথের বিপক্ষে কষ্টার্জিত এফএ কাপ জয়ের পর তিনি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন দেখেছেন, যা তাদের মৌসুম ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে, “সত্যি বলতে, শেষ কয়েকটি ম্যাচে আমি কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি, বিশেষ করে এফএ কাপে বোর্নমাউথের বিপক্ষে সেই কঠিন ম্যাচটি। তারা খুবই আগ্রাসী, শারীরিকভাবে শক্তিশালী দল, এবং আমরা যেভাবে ওদের মাঠে লড়াই করেছি, বিশেষ করে প্রথম গোল হজমের পর, তা এক কথায় অসাধারণ।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।