বাবা হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় দাঁড়াল দুই শিশু। প্ল্যাকার্ড হাতে মায়ের সঙ্গে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় তারা। ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার সকালে বোয়ালমারী পৌর সদরের ওয়াপদার মোড়ে ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন দুলু মোল্যার হত্যার প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মা খাদিজা বেগমের সঙ্গে অংশ নেয় মারিয়া (১০) ও আলী মোল্যা (৮)। এ সময় তাদের মুখে ছিল বিষাদের কালো ছায়া। কথা বলতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়ছিল তারা। তাদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘এতিম ছোট্ট শিশুদের বাবার হত্যাকারীদের কঠোর বিচার চাই, ফাঁসি চাই।’ খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির পাশাপাশি পরিবারের সবার নিরাপত্তার দাবিও জানায় তারা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন নিহত দুলু মোল্যার ভাই আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা, টুলু মোল্যা, বোন শাহিদা বেগম, ভাজতি জামাই কামাল হোসেন, ভাতিজি সোনিয়া বেগম প্রমুখ। 

জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২১ মার্চ বোয়ালমারী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কামারগ্রামে আমির হোসেন মোল্যা ও কাশেম মোল্যার মধ্যে কথা কাটকাটি হয়। এর পরই কাশেম মোল্যার পক্ষের সিদ্দিক মোল্যা, লুৎফর মোল্যারা আমিরের ভাই ব্যবসায়ী দেলোয়ারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার গত রোববার বিকেলে মারা যান।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া ওয়াপদা মোড়ের ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মফিজুল কাদের খান মিল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তিনি দেলোয়ারের কলার ধরে চড় ধাপ্পড় মারছিলেন। এ সুযোগে খুনিরা দেলোয়ারকে কুপিয়েছে।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে মফিজুল সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি বলেন, গণ্ডগোল থামানোর জন্য গিয়েছিলেন তিনি। কাউকে ধরে রাখা বা মারধর করার অভিযোগ সত্য নয়। কে বা কারা দেলোয়ারকে মেরেছে তা তিনি জানেন না। তাঁর দাবি, আহত দেলোয়ারকে তিনি নিজে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি পক্ষ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছে। 

বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সঠিক নয়। ২১ মার্চ গোলমালের পরই পুলিশ মামলা নিয়েছে। দুই আসামিকে ধরে চালান করলে তারা জামিনে বের হয়ে আসেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ, র্যা বসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামিদের খুঁজছে। আগের অভিযোগে মফিজুল কাদের খান মিল্টনের নাম ছিল না। এখন তারা মফিজুলের জড়িত থাকার কথা বলছেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’