বাবা হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় দুই শিশু
Published: 12th, April 2025 GMT
বাবা হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় দাঁড়াল দুই শিশু। প্ল্যাকার্ড হাতে মায়ের সঙ্গে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় তারা। ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার সকালে বোয়ালমারী পৌর সদরের ওয়াপদার মোড়ে ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন দুলু মোল্যার হত্যার প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মা খাদিজা বেগমের সঙ্গে অংশ নেয় মারিয়া (১০) ও আলী মোল্যা (৮)। এ সময় তাদের মুখে ছিল বিষাদের কালো ছায়া। কথা বলতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়ছিল তারা। তাদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘এতিম ছোট্ট শিশুদের বাবার হত্যাকারীদের কঠোর বিচার চাই, ফাঁসি চাই।’ খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির পাশাপাশি পরিবারের সবার নিরাপত্তার দাবিও জানায় তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন নিহত দুলু মোল্যার ভাই আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা, টুলু মোল্যা, বোন শাহিদা বেগম, ভাজতি জামাই কামাল হোসেন, ভাতিজি সোনিয়া বেগম প্রমুখ।
জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২১ মার্চ বোয়ালমারী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কামারগ্রামে আমির হোসেন মোল্যা ও কাশেম মোল্যার মধ্যে কথা কাটকাটি হয়। এর পরই কাশেম মোল্যার পক্ষের সিদ্দিক মোল্যা, লুৎফর মোল্যারা আমিরের ভাই ব্যবসায়ী দেলোয়ারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার গত রোববার বিকেলে মারা যান।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া ওয়াপদা মোড়ের ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মফিজুল কাদের খান মিল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তিনি দেলোয়ারের কলার ধরে চড় ধাপ্পড় মারছিলেন। এ সুযোগে খুনিরা দেলোয়ারকে কুপিয়েছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে মফিজুল সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি বলেন, গণ্ডগোল থামানোর জন্য গিয়েছিলেন তিনি। কাউকে ধরে রাখা বা মারধর করার অভিযোগ সত্য নয়। কে বা কারা দেলোয়ারকে মেরেছে তা তিনি জানেন না। তাঁর দাবি, আহত দেলোয়ারকে তিনি নিজে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি পক্ষ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছে।
বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সঠিক নয়। ২১ মার্চ গোলমালের পরই পুলিশ মামলা নিয়েছে। দুই আসামিকে ধরে চালান করলে তারা জামিনে বের হয়ে আসেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ, র্যা বসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামিদের খুঁজছে। আগের অভিযোগে মফিজুল কাদের খান মিল্টনের নাম ছিল না। এখন তারা মফিজুলের জড়িত থাকার কথা বলছেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটি ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। হামলার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঢেউ’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য শাহাজাহান সাজু, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, প্রথম আলোর বন্ধুসভার জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া এবং ঢেউয়ের সদস্য শাহাদাত হোসেন।
বক্তারা বলেন, যাঁরা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত, তাঁদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। বাংলাদেশ সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার দিয়েছে। একজন সাংবাদিক হিসেবে মাইনুদ্দিন রুবেল সেই অধিকার প্রয়োগ করেছেন। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা যাবে না। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
মাইনুদ্দিন রুবেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি। তাঁর বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটি দাউদপুর গ্রামে। তিনি ২০ বছর ধরে জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে বসবাস করছেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে বিজয়নগরের মির্জাপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের সামনে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কাইয়ুম মিয়া এবং বহিষ্কৃত যুবদল নেতা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সীসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন রুবেল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মোখলেছুর ও কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে মাটি ব্যবসা করছেন। পুকুর ও কৃষিজমির মাটি কেটে তা ট্রাক্টরে করে অন্যত্র বিক্রি করছেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।