সিরাজগঞ্জে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
Published: 13th, April 2025 GMT
সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মদিন মোল্লা (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রুপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতার পদ স্থগিত এবং যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতার পদ স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা বিএনপি। রবিবার (১৩ এপ্রিল) জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে, আজ দুপুরে শাহজাদপুরের রুপবাটি ইউনিয়নের বড়ধুনাইল গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত মদিন মোল্লা (৫৫) বড়ধুনাইল গ্রামের মৃত সগির মোল্লার ছেলে।
আরো পড়ুন:
ঝিনাইদহে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০
মা-মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগ
মাইকিং করে দুই গ্রামের মানুষের সংঘর্ষ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়ধুনাইল গ্রামে সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে জাফর ও যুবদল নেতা আব্দুর রাজ্জাকের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জেরে গত শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাতে রাজ্জাকের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ঘেরাও করে রাখে। এতে ভয়ে ওই সব বাড়ির পুরুষরা পালিয়ে যান। গত শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারা প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালায়। ওই সময় অন্তত ১০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এতে বাধা দিতে গেলে অন্তত ১৫ জন নারী-পুরুষ আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ রবিবার সকালে ওই সব বসতবাড়িতে আবারো হামলা করা হয়। এতে বাঁধা দিতে গেলে জাফরের পক্ষের মদিন মোল্লাকে তার নিজ বাড়ির সামনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় আরো অন্তত ৫ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী বলেন, “ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। মদিন মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রুপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন ও সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল হালিম সেখের পদ স্থগিত এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সেখ ও একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনজাজাম সেখের দলীয় পদ স্থগিতের জন্য জেলা যুবদল ও ছাত্রদলকে নির্দেশনা দিয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি। এছাড়াও ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ ন হত আহত মদ ন ম ল ল ব এনপ র স ঘর ষ য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
সৈয়দপুরে লাশ সামনে রেখে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন, মানসিক আঘাতে মৃত্যুর অভিযোগ
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় এক ব্যক্তির লাশ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবার। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের আমজাদের মোড়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ বসতবাড়িতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি মোসলেম সরদারের (৬০) বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এ কারণে মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন।
অন্যদিকে মামলার বাদী বলেছেন, মোসলেম সরদারের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলা বড় মিথ্যাচার। উল্টো বসতঘর পুড়ে সর্বস্ব হারিয়ে তাঁরা নিঃস্ব।
বাঙালীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মণপুর জোতদারপাড়ার মোসলেম সরদারের পরিবার এ সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাহিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই তসলিম সরদার, ভাতিজা বাবলু সরদার, নাতি মেহেদী হাসান, গৃহবধূ মৌসুমী ও স্থানীয় জহুরুল শেখ।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মোসলেম সরদারের পরিবার ও বাছান জোতদার পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত ১৪ ও ১৫ মে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে মীমাংসায় বসেন। উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে একটা সমাধানে আসেন তাঁরা। কিন্তু ১৮ মে মৃত বাছান জোতদারের ছেলে আবদুল আজিজ ও তাঁর ভাইয়ের বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আবদুল আজিজ বাদী হয়ে মোসলেম সরদারসহ তাঁর পরিবারের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযোগটি একতরফা তদন্ত করে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। এতে মোসলেম সরদার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এমন অবস্থায় তিনি তিন দিন আগে হার্ট অ্যাটাক করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং গতকাল সকালে মারা যান।
এ বিষয়ে আবদুল আজিজ জোতদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলা সত্য না মিথ্যা, তা তদন্তেই প্রমাণিত হবে। আর কারও স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলাই তো বড় মিথ্যাচার। আমাদের দুই পরিবারের ১০ জনকে পেট্রল ছিটিয়ে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আল্লাহর রহমতে আমরা বেঁচে গেছি। এতে সর্বস্ব হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। এর সঠিক বিচার চাই।’