৪১৫৬৭ অসহায় ও দুস্থ অনুদানের অপেক্ষায়
Published: 13th, April 2025 GMT
টাকার অভাবে কেউ ওষুধ কিনতে পারছেন না; কারও থেরাপি নেওয়া বন্ধ। কারও চিকিৎসাই বন্ধ। ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ৪১ হাজার ৫৬৭ রোগী পড়েছেন বিপাকে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের অনুদান তারা পাচ্ছেন না।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিবছর ৩ লক্ষাধিক লোক ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্তরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়। অনেকের পরিবার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
‘হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রমে’র মাধ্যমে দুস্থ ও অসহায় রোগীদের আর্থিক সহায়তা দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। ২০১০ সাল থেকে তিন মাস অন্তর টাকা দেওয়া হয়। বর্তমানে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চের টাকা চলতি এপ্রিল মাসের অর্ধেক পার হলেও তারা পাননি। কবে পাবেন, তা তারা জানেন না।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা রাশেদা বেগম (৪৫) জানান, তিনি স্তন ক্যান্সারে ভুগছেন। ভ্যানচালক স্বামী এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁর পরিবার। অভাবের কারণে তিনি চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। উপায়ান্তর না পেয়ে এলাকার মানুষের পরামর্শে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করেন। আর্থিক সাহায্য পেলে তিনি চিকিৎসা করাতে পারবেন।
খুলনা সদরের মহেষ্যপাশার মানিকতলার বাসিন্দা ইয়াসমিন জাহান মাঈশা (২৫) জানান, দুরারোগ্য ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। সমাজসেবা অধিদপ্তরে সাহায্যের আবেদন করেছেন। তাঁর স্বামী ইজিবাইক চালক। সংসারে রয়েছে দুই কন্যা। চিকিৎসার খরচ জোগাতে তিনি ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বেলী বেগম (৪৫) জানান, তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত। স্বামী আলমগীর হোসেন তেমন কোনো কাজ করেন না। ছোট্ট একটি ফার্মেসির উপার্জন দিয়ে চলছে তাঁর সংসার। চিকিৎসার টাকা জোগাতে তারও হিমশিম খেতে হচ্ছে। শেষ ভরসা হিসেবে সমাজসেবায় জমা দিয়েছেন সহায়তার আবেদন।
জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান সমকালকে বলেন, বছরে চারবার এই টাকা দেওয়া হয়। সর্বশেষ ডিসেম্বরে টাকা দেওয়া হয়েছে। শিগগির এবারের টাকা ছাড় দেওয়া হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা) মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।
ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন।
লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।
ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক/টিপু