মানুষকে যেহেতু প্রতিবেশীকে ‘ইহসান’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এটাই বলে দেয় যে, প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরও বেশি করেই।

রাসুল (সা.) প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া থেকে সতর্ক করেছেন।

আবু শুরাইহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়।’ জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আল্লাহর রাসুল, কে মুমিন নয়? তিনি বললেন, যার পীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৬)

আবু হোরায়রা (রা.

)-র পক্ষ থেকেও একই রকম একটি বর্ণিত হয়েছে, যেখানে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে না, যার পীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৬)

আরও পড়ুনযাঁর নামে কোরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে০৮ এপ্রিল ২০২৫

তিনি আরও বলেন, ‘নবীজিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর রাসুল, অমুক নারী রাতভর ইবাদত করেন, দিনভর রোজা রাখেন, বহু সৎকাজ করেন এবং প্রচুর সদকা করেন। কিন্তু প্রতিবেশীকে মুখের কথায় কষ্ট দেন। রাসুল (সা.) বললেন, তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। সে আগুনের অধিবাসী হবে। (আল-আদাবুল মুফরাদ, ইমাম বুখারি, হাদিস: ১১৯)

তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৮)

প্রতিবেশীর যদি কষ্ট দেয়

প্রতিবেশীর অধিকার আদায়ের সম্পূর্ণতা হলো, তার দেওয়া কষ্ট সহ্য করা, তার সঙ্গে কোমল আচরণ করা এবং তার কল্যাণ কামনা করা।

এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে বললেন, ‘আমার এক প্রতিবেশী আছে, সে আমাকে কষ্ট দেয়, আমাকে গালমন্দ করে, আমাকে সংকীর্ণ অবস্থায় ফেলে।’ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘সে তোমার ব্যাপারে আল্লাহর অবাধ্যতা করছে বটে, কিন্তু তুমি তার ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ অমান্য করো না।’ (ইহইয়াউ উলুম আদ-দীন, ২/২১২)

আরও পড়ুনমন্দ প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের উপায়০৬ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন নয় আল ল হ বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ