বিসিবিতে দুদকের অভিযান, মুজিববর্ষ আয়োজনে ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ
Published: 15th, April 2025 GMT
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্য একটি অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন।
বিসিবিতে প্রায় দেড় ঘণ্টার অভিযান পরিচালনার পর সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, তারা তিনটি অভিযোগ পাওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ হলো- বিপিএলের প্রথম ১০ আসরের টিকেট বিক্রির আয়ে অসঙ্গতি। অন্যটি হলো মুজিব শতবর্ষ আয়োজনে বিসিবির অর্থ আত্মসাত।
এছাড়া দুদকের প্রধান কার্যালয়ের চিঠিতে জানানো হয়, বিসিবি’র বিভিন্ন ক্রিকেট লিগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের জন্য টিম পাঠানো হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন পরে ২০২০-২১ সালে বিসিবির আয়োজিত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আয়-ব্যয়ে গড়মিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষের আয়োজনে আয়-ব্যয়ে অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ড-পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। যা যাচাইবাছাই করে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করবো। পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কমিশন।’
মুজিববর্ষ আয়োজনের অসঙ্গতির প্রসঙ্গে আল-আমিন বলেন, ‘কনসার্টসহ বিসিবির সব আয়োজনে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। তবে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার কিছু একটা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি আমরা। টিকেট বিক্রির ২ কোটি টাকাও দেখানো হয়নি। অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ তাই বাড়তে পারে। আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। বিসিবির অর্থ বিভাগে কাগজপত্র পেয়েছি। সব কাগজপত্র হাতে পেলে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো।’
বিপিএলের টিকেট বিক্রির আয়ে অস্বাভাবিকতা সম্পর্কে দুদকের এই সহকারী পরিচালক জানান, বিসিবি একাদশ আসরে ১৩ কোটি টাকা টিকিট বিক্রি থেকে আয় করেছে। যেখানে আগের আট বছরে আয় ছিল ১৫ কোটি। এখানে অস্বাভাবিকতা আছে। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে আছে।
বিসিবির তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ২০১৪-১৫ মৌসুম থেকে ক্লাব নিবন্ধন ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে টুর্নামেন্টে দলের অংশগ্রহণ কমে। গত ক’বছরে ৫টির বেশি দল তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয়নি। অর্থ নিয়ে এই কারসাজির অভিযোগ পুরনো। দুদক জানিয়েছে, আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, দুদককে তাদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ববর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশা চলকদের ধর্মঘট চলছে, ভোগান্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক ও চালকদের ডাকা ধর্মঘট। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল থেকে তারা গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
গত শনিবার (২৬ জুলাই) জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা পরিবহন মালিক সমিতির জরুরি বৈঠকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশার চালকদের কর্মবিরতি, যাত্রীদের দুর্ভোগ
আরো পড়ুন:
জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক
সড়কে গর্ত, চলাচলে দুর্ভোগ
সড়কে ট্রাফিক পুলিশের লাগাতার হয়রানি, সিএনজি অটোরিকশা আটক এবং ছাড়ানোর জন্য মোটা অংকের টাকা দাবির প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
পথচারীরা জানান, আজ সকাল থেকে জেলার সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডগুলো থেকে কোনো অটোরিকশা চলছে না। চালক ও মালিকরা স্ট্যান্ডে বসে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যান চলাচলে বাধা দিচ্ছেন অটোরিকশাচালক ও মালিকরা। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। উপায় না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে ছুটছেন। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকে গন্তব্যে যেতে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হেফজুল করিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে পুলিশ প্রতিনিয়ত গাড়ি আটকে হয়রানি করে। গাড়ি ছাড়ানোর জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করে ট্রাফিক পুলিশ। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
গতকাল রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেছিলেন, ‘‘ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। যাদের কাগজপত্র নেই বা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চলছে, তাদের গাড়ি আটক করা হচ্ছে। কাগজপত্র আনলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের কাগজপত্র আছে, তারা নির্বিঘ্নে চলতে পারছেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘তারা চাচ্ছেন, তাদের কোনো গাড়ি যেন আমরা না ধরি। ট্রাফিক পুলিশ যেন কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে। এটা তো হয় না।’’
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ