রাজশাহীতে নদীঘাটে পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 15th, April 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে ফেরিঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পদ্মা নদীর বিদিরপুর ঘাটে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এতে চর আষাড়িয়াদহ ও আলাতুলী ইউনিয়নের মানুষজন অংশ নেন।
প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ঘাট এলাকায় জড়ো হন। ‘ঘাট নয়, যেন মরণফাঁদ’, ‘চাঁদাবাজি বন্ধ করো’, ‘সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ঘাটের ইজারা রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন দিয়ে থাকে। ঘাট ইজারার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু ঘাটের সরকারি ইজারামূল্য বেশি হওয়ায় কেউ ঘাট নেয়নি। পরে স্থানীয়ভাবে কয়েকজনকে ২৮ দিনের জন্য দেড় লাখ টাকায় ঘাটটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দুই দিন ধরে ঘাট পরিচালনা করছেন। কিন্তু পারাপারের জন্য প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা মানাছেন না ঘাটের মাঝিরা। তাঁরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, তাঁদের এই ঘাট ছাড়া চলাচলে বিকল্প কোনো পথ নেই। কিছুদিন আগে ঘাট ইজারা হয়েছে। ইজারাদাররা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। একজন মানুষ নৌকা দিয়ে পার হলে সরকার নির্ধারিত টোল পাঁচ টাকার জায়গায় ২০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে এলাকাবাসী বিপাকে পড়েছেন।
চরের বাসিন্দা আব্দুল্লাহীল কাফি জানান, ঘাটমালিকদের কাছে তাঁরা জিম্মি। জেলা পরিষদ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা সেটি মানছেন না। জোর করে তাঁদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা অতিরিক্ত টাকা দিতে চান না।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁর এলাকার মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জেলা পরিষদের নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে কারও কাছ থেকে একটি টাকাও নেওয়া যাবে না। তিনি ঘাটমালিকদের বলে দিয়েছেন সে অনুযায়ী ভাড়া নিতে।
অভিযোগের বিষয়ে ইজারাদারদের একজন হামিদুল ইসলাম (সুজন) বলেন, ‘ঘাটের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ঘাটটি কেউ নেয়নি। পরে এক মাসের জন্য তাঁরা ঘাটটি নিয়েছেন। কিন্তু সাত-আট কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে জনপ্রতি মাত্র পাঁচ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা চালাতে দুজন মানুষের প্রয়োজন হয়, পাঁচ টাকায় তাঁরা কী নিবেন, আর আমরা কী নেব। তাই ভাড়া সংশোধনের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
সাপ্তাহিক ‘পঙক্তি’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীর সমান অধিকার, সাংস্কৃতিক জাগরণ ও মুক্তচিন্তার বিকাশ ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয় এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাপ্তাহিক পঙক্তির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
‘সাম্য, মর্যাদা ও আলোকিত সমাজের স্বপ্নে ৭১ ও ২৪ এর তরুণরা’
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, “নারীরা অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও পুরুষতান্ত্রিক নানা বৈষম্য ও হেনস্তার শিকার হন। আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও নারী ও শিশুরা লাঞ্ছিত, নিপীড়িত হচ্ছে, এটি লজ্জার বিষয়। আমরা এমন সমাজ চাই না। আমরা চাই একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত সমাজ, যেখানে নারী–পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকবে।”
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বলেন, “আমরা বর্তমানে একটি সাংস্কৃতিকভাবে খারাপ সময় পার করছি। একটি নতুন রাজনৈতিক আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে যে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, তাতে একমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবই আমাদের জাতিকে রক্ষা করতে পারে।”
কবি ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান বলেন, “ফেসবুক–ইউটিউবের যুগে একটি সাহিত্য পত্রিকা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। বর্তমানে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে মাজার, দরগা, শিল্পী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তৎপরতা। এই আক্রমণ জাতিসত্তার উপর আক্রমণ, আমাদের শিল্প–সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সুকুমার ভিত্তির উপর আঘাত। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে সাপ্তাহিক পঙ্ক্তির সম্পাদক কবি জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না ওরফে পান্না বেগম বলেন, “আজ আমি খুব আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমি একজন সফল নারী বলে নিজেকে সম্মান করি। আমি ২৬ বছর ধরে কাজ করি। কারোর মুখাপেক্ষী হইনি। একটি পত্রিকা কারোর সহযোগিতা ছাড়া নিয়মিত প্রকাশ করা এতোটা সহজ নয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজকের এই জায়গাটি তৈরি হয়েছে।”
বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মফিজুর রহমান বাবু বলেন, “সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি পত্রিকাটি নিয়ে প্রথম থেকেই আমার একটি চিন্তা ছিল। পত্রিকাটির নাম পঙ্ক্তি কেন? খুব চিন্তা করে এর দুইটি কারণ খুঁজে পেলাম। একটি হলো-এই পত্রিকাটির সম্পাদক একজন কবি ও সাংবাদিক। উনার কবিসত্তার চিন্তাধারা থেকে এই নামটি নির্ধারণ করেছেন। কারণ পঙ্ক্তি শব্দের অর্থ কবিতার লাইন বা সারি। আর দ্বিতীয়টি হলো- সম্পাদকের একমাত্র কন্যার নাম পঙ্ক্তি। সন্তানের প্রতি একজন মায়ের যে অসাধারণ ভালোবাসা, তারই বহিঃপ্রকাশ হলো সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি।”
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক মানিক মুনতাসির, কবি ও সাংবাদিক বজলুর রহমান, কবি মোশাররফ হোসেন ইউসূফ, বাংলানিউজের সাংবাদিক তুলনা আফরিন প্রমুখ।
ঢাকা/এসবি