বিপ্লবের স্মৃতিজড়িত ‘পাইকতু পর্বত’ এখন গ্লোবাল জিওপার্ক
Published: 15th, April 2025 GMT
উত্তর কোরিয়ার পাইকতু পর্বতকে গ্লোবাল জিওপার্ক হিসেবে মনোনীত করেছে ইউনেস্কো। পর্বতটিকে পবিত্র পর্বত বলা হয়। এই পর্বতের সামরিক চেকপয়েন্ট ও এবড়োখেবড়ো ময়লা রাস্তা পেরিয়ে উঁচুতে উঠে গেলে চোখে পড়ে আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট একটি গভীর হ্রদ।
পর্বতটির অবস্থান উত্তর কোরিয়া ও চীনের সীমান্তে। এই পর্বতেই কোরিয়ান উপদ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, প্রথমবারের মতো পাইকতু পর্বত গ্লোবাল জিওপার্কের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পর্বতটির প্রকৃতিকে চিত্তাকর্ষক ও এলাকাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যভুক্ত হিসেবে মনোনীত করে। তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আগ্নেয়গিরি, হিমবাহের ক্ষয় এবং পাথুরে সমভূমি পাইকতুকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করেছে।
জিওপার্কের তাৎপর্য বুঝতে হলে আপনাকে পাইকতুর ‘চোন’ হ্রদের ধারে দাঁড়াতে হবে। লেকটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭ হাজার ২০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। হাজার বছরের বেশি আগে এক বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লেকটি জন্মলাভ করে। লেকের ধারে দাঁড়ালে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বাতাসের শির শির আমেজ।
পর্বতটিকে বলা হয়, ‘কোরিয়ান বিপ্লবের আত্মা’। পর্বতটির মেঘে ঢাকা ঢাল নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে নানা গল্প। যদি আপনি কখনও নিজে পর্বতের চূড়ায় স্থির হন, হ্রদের দিকে তাকিয়ে থাকেন এবং হিম বাতাসে শ্বাস নেন, তাহলে বুঝতে পারবেন কেন পর্বতটি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার ‘আত্মা’ ধারণ করে।
কাহিনি প্রচলিত আছে, পর্বতটি ছিল প্রথম কোরিয়ান রাজ্যের পৌরাণিক প্রতিষ্ঠাতা ডাঙ্গুনের জন্মস্থান। উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং (কিম জং উনের দাদা) ১৯৪০-এর দশকে স্বাধীনতার জন্য জাপানি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় পাহাড়টিকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সুংকে ‘পাইকতুর কিংবদন্তি নায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কিম রাজবংশ তাদের পারিবারিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শনের জন্য এই পর্বতটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে। এই পর্বতের নামে রকেট, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশটির নানা প্রতিষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছে।
ইউনেস্কোর মতে, বর্তমানে ৪৯টি দেশে ২০০টিরও বেশি জিওপার্ক রয়েছে। জিওপার্কের স্থানগুলোর কিছু অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে। জিওপার্কের জন্য বিশেষ ভৌগোলিক অঞ্চলের স্বীকৃতি বা আঞ্চলিক ভূতাত্ত্বিক তাৎপর্যপূর্ণ স্থানকে অগ্রাধিকারভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির কারণে পাইকতু পর্বতকে একটি ভূপর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে পিয়ংইয়ং।
পাইকতুর আশপাশের জীবনযাত্রা গ্রামীণ ও বিচ্ছিন্ন। ২০১৭ সালে যখন সিএনএনের প্রতিবেদক পাইকতু পর্বত পরিদর্শনে যান, তখন ক্যামেরা দেখে শিশুরা ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। হয়তো তারা কোনো বিদেশিকে কখনও দেখেনি। কাইকতুর নিকটতম শহর সামজিওন। এখানে সুংয়ের স্মৃতিস্তম্ভগুলো শোভা পাচ্ছে। ভবনগুলোতে জাপানিদের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন এখনও লক্ষ্য করা যায়।
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর পাইকতু এখন আর সাধারণ কোনো স্থান নয়। এটি এখন থেকে বিশ্বব্যাপী ‘বিশেষ ভূতাত্ত্বিক মর্যাদা’ লাভ করল। সিএনএন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট