আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতীক নৌকা নিয়ে গত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তাকে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বলা হচ্ছে। তার নামে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। যে কারণে দেশে আসতে পারছেন না সাকিব। খেলতে পারছেন না জাতীয় দলের হয়ে। এমনকি ঘরের মাঠে টেস্ট খেলে অবসর নেওয়ার ইচ্ছেও পূরণ হয়নি তার।

সাকিব জাতীয় দলের হয়ে ১৮ বছর ক্রিকেট খেলেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন ৬ মাস। তাতেই যেন ক্রিকেটার ছাড়িয়ে তার রাজনৈতিক পরিচয় মূখ্য হয়ে উঠেছে। অথচ সাকিব মনে করেন রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না। এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এবং তিনি অংশ নিলে তাকে কেউ হারাতে পারবে না। সংবাদ মাধ্যম ডেইলি সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন লম্বা সময় আইসিসির সেরা অলরাউন্ডার থাকা বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব।

তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমার জন্য যদি রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে যারাই রাজনীতিতে অংশ নেবে তারা ভুল করতে যাচ্ছে। তিনি ডাক্তার হন, ব্যারিস্টার হন কিংবা ব্যবসায়ী, রাজনীতিতে যোগ দেওয়া মানেই ভুল। কিন্তু রাজনীতিতে যোগ দেওয়া সকল নাগরিকের অধিকার, যেকেউ রাজনীতি করতে পারে। জনগন ভোট দেবে কিনা সেটা তাদের বিষয়। আমি মনে করি, যখন রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলাম, আমি সঠিক ছিলাম। এখনো মনে করি, আমি সঠিক। কারণ আমার উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার জনগণের জন্য কাজ করা।

আমার মনে হতো, আমি তাদের জন্য কিছু একটা করতে পারবো। আমি মনে করি, আমার আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল এবং  আমি মনে করি এ বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই। আমি যদি আবার নির্বাচনে অংশ নিই আমাকে কেউ হারাতে পারবে না। যখন আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম, এটাকে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ হিসেবে দেখেছিলাম। র্দূভাগ্যবশত, যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবে তাদের আমি সেবা করতে পারিনি, এটা আমাকে স্বীকার করে নিতে হবে।’

মাগুরার মানুষের সেবা করার জন্য নির্বাচনে অংশ নিলেও সাকিব স্বীকার করেছেন, ছয় মাস এমপির দায়িত্ব পালন করলেও তিনি মাগুরা গেছেন তিনবার। ক্রিকেট নিয়েই বেশি ব্যস্ত থেকেছেন। বাকি সময় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারকে। সাকিব বলেন, ‘আমি ৬ মাসের মতো রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলাম। এমপি হওয়ার পর মাগুরা গিয়েছি তিনবারের মতো। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, তোমার রাজনীতি করার দরকার নেই। খেলায় মন দাও। আমি উনার উপদেশ শুনেছি। চার-পাঁচ মাসের মতো ক্রিকেট খেলেছি। বাকি সময়টা পরিবারকে দিয়েছি।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন র জন ত ত র র জন ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান

ভুলক্রমে সীমানায় ঢুকে পড়ায় পাকিস্তানি রেঞ্জারদের হাতে আটক হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বিএসএফের অনুরোধেও কর্ণপাত করছে না পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে পঠানকোট বিএসএফ দপ্তরে স্বামীর সর্বশেষ খবর জানিত ছুটে গেছেন পুর্নমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও পরিবার। 

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাও সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে আটক হন বিএসএফ সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রিষড়া পৌরসভার ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পুর্নম পাঠানকোটের ফিরোজপুর বর্ডারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চব্বিশ ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ কনস্টেবল। 

বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনকালে কড়া রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়লে গাছের নিচে আশ্রয় নেন পুর্নম। এ সময় তিনি ভুল করে বর্ডার পেরিয়ে গেলে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক হন। এ দিকে ঘটনার পর তিনবার পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বিএসএফ। কিন্তু তারা পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে দেয়নি। 

স্বামীর এমন দুঃসংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। শেষবার হোলির সময় ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন পুর্নম। গত ৩১ মার্চ কাজে যোগ দেন তিনি।  

পুর্নমের বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, ছেলেকে নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। কোনো খবর পাচ্ছেন না। বিএসএফ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ছেলেকে মুক্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। 

সীমান্তরক্ষীদের ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর বৈঠকের পরে তাদের মুক্তিও দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি ভিন্ন। পাক রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। গত শুক্রবার পর্যন্ত এই ইস্যুতে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসেছেন বিএসএফ এবং পাক রেঞ্জার্সের প্রতিনিধি দল। কিন্তু মিমাংসা হয়নি।   

এরপরই রবিবার পুর্নমের বাড়ি যান বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা পুর্নমকে মুক্ত করে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। যদিও মৌখিক কথায় আর ভরসা রাখতে রাজি নন রজনী। এ কারণে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ সোমবার পাঠানকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে তথ্য না পেলে দিল্লি গিয়ে স্বামীর খবর জানতে চাইবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বিএসএফের পরিচালক জেনারেল দলজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন ঘটনার পরে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে আনতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। এমনকি পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে কমান্ডার স্তরে বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

সুচরিতা/তারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘একদিন দেখি পশুরমতো ঘরের কোণে বসে কাঁপছে ববি’
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান