কুয়েট শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে কুবিতে মানববন্ধন
Published: 16th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন কুবি শিক্ষার্থীরা।
এ সময় গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হান্নান রহিম বলেন, “কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে যে বহিষ্কার আদেশ দিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি। সেখানে কারা হামলা করেছে, তাও সবার জানা। তারপরও কুয়েটের উপাচার্যের এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
আরো পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ
কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ফ্যাসিবাদমুক্ত নববর্ষ
তিনি আরো বলেন, “কুয়েট কি বাংলাদেশের গাজা? গাজায় যেমন বর্বরোচিত হামলা চলছে, কিন্তু ভুক্তভুগীরা বিচার পাচ্ছে না। ঠিক তেমনি কুয়েটেরও একই অবস্থা। আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। কুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবির বলেন, “কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীর দায় স্বীকারের পরো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো সাধারণ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। কুয়েটের উপাচার্যের এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমি কুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি জানাবো, এমন বিচারের নামে প্রহসন বন্ধ করুন।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জামাল হোসেন রাজু বলেন, “আমরা দেখছি ঢাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যেভাবে ফ্যাসিস্ট আচরণ করছে, কুয়েট উপাচার্য একই আচরণ করছে। আমরা আশা করবো, তিনি তার ফ্যাসিস্ট আচরণ পরিহার করবে। নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে মানিয়ে নেবেন, অন্যথায় পদত্যাগ করবেন। আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ নোয়াখালীর মাহমুদুল হাসান ওরফে রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসানকে (১৬) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে আহত শাহরিয়ারের মা ফরিদা ইয়াসমিন ২১ জনকে আসামি করে সুধারাম থানায় মামলাটি করেছেন। মামলার তিন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে শাহরিয়ার হাসানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার প্রতিবাদে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তাহের মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ সদস্য। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। একই সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া চারটার দিকে জেলা শহর মাইজদীর বার্লিংটন মোড় এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় শাহরিয়ার হাসান গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শাহরিয়ার শহরের হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিশাহরিয়ার হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘নোয়াখালীর সর্বস্তরের ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় তাঁরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগানও দেন।
সমাবেশে হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিরাপদে স্কুলে আসতে পারবে না, স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে পারবে না; স্বাধীন দেশে এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কিশোর গ্যাং লালনকারীদের আমরা সাবধান করে দিতে চাই। এ ধরনের তৎপরতা বন্ধ না হলে আপনাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াব।’
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’। কর্মসূচিতে পটুয়াখালীতে এক শহীদের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা ও নোয়াখালীতে শহীদের ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের জেলা সংগঠক শহিদ আলম, জয়নুল আবেদীন, জান্নাতুল ফেরদাউস, ইমাজ উদ্দিন প্রমুখ।