সেনা প্রত্যাহার ছাড়া যুদ্ধবিরতি নয়: হামাস
Published: 17th, April 2025 GMT
গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলে যুদ্ধবিরতি হবে না বলে জানিয়েছে হামাস। হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অবশ্যই গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। গতকাল বুধবার ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবটি বিবেচনা করার পর প্রথম মন্তব্যে এ বার্তা জানায় হামাস।
আলজাজিরা জানায়, হামাস জানিয়েছে, যতক্ষণ ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে পুরোপুরি সরে না যাবে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো জিম্মিকে তারা মুক্তি দেবে না। ফিলিস্তিন এবং তাদের প্রতিবেশী দেশগুলো ইসরায়েলি সেনাদের তাদের ভূমিতে অবস্থানকে সামরিক দখলদারিত্ব হিসেবে বিবেচনা করে, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
এদিকে দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, গাজা, লেবানন এবং সিরিয়ার কথিত ‘নিরাপত্তা অঞ্চলে’ অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের সেনা মোতায়েন থাকবে। তাঁর এ ঘোষণার কারণে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির আলোচনা আরও কঠিন হয়ে পড়ল। গত মাসে চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর গাজার বিস্তৃত অঞ্চল (প্রায় অর্ধেক) দখল করে নেয় ইসরায়েলি সেনারা। বুধবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অতীতের মতো ইসরায়েলি সেনারা যেসব অঞ্চল পরিষ্কার অথবা দখল করেছে, সেসব অঞ্চল থেকে সরে যাচ্ছে না।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলায় ক্ষুব্ধ। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে মাখোঁ বলেছেন, গাজায় মানুষের দুর্দশা যেন অবিলম্বে বন্ধ হয়। একমাত্র যুদ্ধবিরতি হলেই বাকি পণবন্দিরা মুক্তি পাবেন। মঙ্গলবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে এসব কথা বলেন তিনি।
গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে কমপক্ষে আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিরল সফর করেছেন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার তিনি এ সফর করেন বলে জানিয়েছে তাঁর কার্যালয়। উপত্যকাটিতে নির্বিচারে ইসরায়েলি বাহিনী হামলার মধ্যেই সফর করলেন নেতানিয়াহু। এ সময় হামলা আরও জোরদারের কথা বলেন তিনি।
এএফপি জানায়, চিকিৎসা সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) বলেছে, ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালিয়ে এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে গাজাকে কার্যত ফিলিস্তিনি ও তাদের সাহায্যে আসা মানুষের কবরস্থানে পরিণত করেছে। গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে লাখো মানুষ চরম বিপদে পড়েছেন। এমএসএফের সমন্বয়কারী আমান্দে বাজেরোলে বলেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনি ও তাদের সাহায্যে আসা ব্যক্তিদের গণকবরে পরিণত হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।