উদ্ধারপ্রক্রিয়ায় এলাকাবাসীকে যুক্ত করুন
Published: 17th, April 2025 GMT
মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকেও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সুসংবাদ দিতে পারেননি নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠক সূত্রে জানানো হয়, ১ হাজার ৩৮৭টি অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশের সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা-ফাঁড়িসহ পুলিশের নানা স্থাপনা থেকে ৫ হাজার ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছিল। লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদের মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের রাইফেল, এসএমজি (স্মল মেশিনগান), এলএমজি (লাইট মেশিনগান), পিস্তল, শটগান প্রভৃতি।
লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারে গত ৪ সেপ্টেম্বর যৌথ অভিযান শুরু হয়। ইতিমধ্যে সেই অভিযানের সাত মাস পার হয়ে গেছে। এরপরও প্রায় দেড় হাজার লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া উদ্বেগজনকই বটে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে, অস্ত্রগুলো কাদের কাছে আছে? সংশ্লিষ্টদের দাবি, লুট হওয়া অস্ত্র জেল পলাতক আসামি, পেশাদার অপরাধী এমনকি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
এ কথা ঠিক যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে নৈরাজ্যকর অবস্থা চলছিল। এই সুযোগে একশ্রেণির আসামি জেল থেকে পলায়ন করেন, যাঁদের সবাইকে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। মাস কয়েক আগে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথম আলোকে বলা হয়েছিল, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামির মধ্যে ৭০০ জন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ বেশ কিছু জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিন নিয়ে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। আবার রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যেও পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। যেদিন ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক হয়, সেদিনই ফেনীর সোনাগাজীতে একটি দলের যুব সংগঠনের নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এত বাহিনী নিয়োগ ও এত অভিযান চালানো সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার কারণ, লুটের অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা। অস্ত্র একবার বেহাত হলে সেটি উদ্ধার করা কঠিন। সরকার পরিবর্তনের পর মাঠপর্যায়ে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানকার পরিস্থিতিই সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল নন। ফলে সেখানকার অপরাধীদেরও তাদের চেনার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তা নিতে পারেন।
প্রতিটি থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসংক্রান্ত কমিটি আছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে এসব কমিটি অপরাধী ধরার চেয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বেশি ব্যস্ত ছিল। অতএব, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে কমিটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি সক্রিয় করাও জরুরি। স্থানীয় জনগণের সহায়তা পেলে ‘দুষ্ট লোক’ খুঁজে বের করা ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার কঠিন নয়।
এ কথা স্বীকার করতে হবে যে যতই দিন যাচ্ছে, ততই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। অবিলম্বে অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে অপরাধের মাত্রাও বাড়তে থাকবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হলে প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে, কাদের কাছে এই অস্ত্র আছে।
আমরা আশা করতে চাই, অন্তর্বর্তী সরকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেবে। রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক উভয় শ্রেণির অপরাধীদের হাতে লুট হওয়া অস্ত্র আছে। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করি না। আইনকে সর্বক্ষেত্রে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত র জন ত ক ল ট হওয় র করত সরক র অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।