ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির কাছে নতি স্বীকার না করার পর, এবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে মার্কিন সরকার। খবর বিবিসির।

হোয়াইট হাউজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়টিকে নিয়োগ, ভর্তি এবং শিক্ষাদান পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, নতুন সংস্কার ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে।

গাজা যুদ্ধ ও ইসরায়েলকে সমর্থনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আরো পড়ুন:

মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব, মনে করছে বিএনপি

৫০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ শোধ করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বুধবার (১৬ এপ্রিল) মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং ‘ইহুদি-বিদ্বেষের কাছে নতজানু’ হওয়ার অভিযোগ এনেছেন।

তিনি হার্ভার্ডকে দেওয়া এক চিঠিতে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিদেশি শিক্ষার্থীদের অবৈধ ও সহিংস কার্যকলাপ সম্পর্কিত রেকর্ড দাবি করেছেন।

ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, “যদি হার্ভার্ড তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ হারাবে।”

চলতি বছর হার্ভার্ডে ভর্তির ২৭ শতাংশেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী।

গাজা যুদ্ধ ও ইসরায়েলকে সমর্থনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

গত সোমবার হার্ভার্ড কমিউনিটিতে দেয়া একটি চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় এর স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকারকে পরিত্যাগ করবে না।”

 

যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যারা নীতি পরিবর্তনে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপকে প্রত্যাখান করেছে। 

হার্ভার্ড তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া, নিয়োগ এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর সরকারি তদারকি মানতে অস্বীকার করায় ট্রাম্প এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ। 

মার্কিন সরকার ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেছে। এছাড়াও ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত মর্যাদাও বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন। এর ফলে প্রতি বছর লাখ লাখ ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে হার্ভার্ড। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেন, “হার্ভার্ডকে আর শিক্ষার জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না এবং বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের কোনো তালিকায় এটিকে বিবেচনা করা উচিত নয়। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে রসিকতা। এখানে ঘৃণা ও বোকামি শেখানো হয়। হার্ভার্ডের আর ফেডারেল তহবিল পাওয়া উচিত নয়।”

হার্ভার্ডের ওপর প্রশাসনের আক্রমণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়, ট্রাম্প বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেল তহবিল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেগুলোকে রক্ষণশীলদের প্রতি শত্রু হিসেবে চিত্রিত করেছিলেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, তার প্রশাসন বিশেষ করে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নজর দিয়েছে যেখানে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ হয়েছে। কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী বলেছেন যে, তারা অনিরাপদ বোধ করেছেন এবং ক্যাম্পাসে হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন।

ফেব্রুয়ারিতে গঠিত সরকারের ইহুদি-বিরোধী টাস্ক ফোর্স পর্যালোচনার জন্য কমপক্ষে ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয় চিহ্নিত করেছে।

গত মাসে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকটি দাবি মেনে নেয়। ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার ঘোষণা দিলে ট্রাম্পের দাবির কাছে নতজানু হয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ দাবির প্রতি প্রকাশ্যে সাড়া দেয়নি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র ফ ড র ল তহব ল র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ