জুলাই হামলায় জড়িতদের শনাক্তে ছায়া তদন্ত কমিটি করলেন শিক্ষার্থীরা
Published: 17th, April 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৪ ও ১৫ জুলাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্তে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে ৩৪ সদস্যের এই ছায়া তদন্ত কমিটির ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের তদন্ত কমিটিকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা যদি এ নিয়ে কাজ করে কিছু তথ্য প্রমাণাদি বের করে, তাহলে তো আমি বলব এটা আমাদের তথ্যানুসন্ধান কমিটির কাজকে সহায়তা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহম্মেদ রিফাত। তিনি বলেন, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান কাজ হবে জুলাই–আগস্টে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। এক মাসের মধ্যে শ্বেতপত্রটি প্রকাশ করা হবে।
এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপযুক্ত তথ্য–প্রমাণ দিয়ে হামলাকারীদের তালিকা প্রণয়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান রেজওয়ান আহম্মেদ। গুগল ফরম হিসেবে https://forms.
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেজওয়ান আহম্মেদ বলেন, ‘সময় যত যাচ্ছে, তথ্য–প্রমাণ মুছে যাচ্ছে। তাই আমরা একটা শ্বেতপত্র তৈরি করে রেখে দিতে চাই, যেন আগামী প্রজন্ম মনে রাখে যে কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা এটা পরে প্রশাসনের কাছে জমা দেব। প্রশাসন চাইলে আমাদের রিপোর্ট বিবেচনায় নিয়ে তদন্তে নামতে পারে।’ অনলাইনে উসকানি দেওয়া, ফেসবুক মেসেঞ্জারে হামলার বিষয়ে ইন্ধন দেওয়ার ব্যক্তিদেরও এ তালিকায় রাখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সর্দার নাদিম মাহমুদ বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হাজারখানের ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী হামলা চালান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটিতে আমরা মাত্র ১২৮ জনের নাম পাই। তাই আমাদের এই উদ্যোগ।’
ছায়া তদন্ত কমিটির সদস্য যাঁরা
রেজওয়ান আহমেদ রিফাত, নাজিমুদ্দিন সাইফ, স্মৃতি আফরোজ সুমি, মিনহাজুল আলী ঈশান, নুরুল ইসলাম, নাহিদ, ঐতিহ্য আনোয়ার ওহী, রওনক জাহান, জাহেদ হোছাইন, রুহুল আমিন রবিন, আবু মিশাল, সর্দার নাদিম মাহমুদ শুভ, আরিফুর রহমান, আহমেদ তানভীর, মো. আরমান হোসেন, মোনতাকিম তালুকদার, মাহমুদ রিদওয়ান, বায়েজিদ হাসান, এ এ এম মোজাহিদ, মো. দেলোয়ার হোসেন, তাপসী রাবেয়া, রাকিব রহমান, মো. মুঈনুজ্জামান, মুসআব আব্দুল্লাহ খন্দকার, মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম, মো. পাভেল আহমদ, নাফিসা তাবাসসুম মিথিলা, পারভেজ গাজী, মো. রুবায়েত হাসান রিমন, ইমরান সাদমান, আবু উবাইদা আব্দুল্লাহ খন্দকার, মো. জহির রায়হান, মো. মারুফ হাসান, মো. তরিকুল ইসলাম ও ওমর ফাইয়াজ তামিম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জওয় ন আহম
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত