কথা না শুনলে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ
Published: 18th, April 2025 GMT
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী কিছু ভিসাধারীর তথ্য না দিলে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি হারাতে পারে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সচিব ক্রিস্টি নোম এ হুমকি দেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়টিকে হাস্যকর প্রতিষ্ঠান অভিহিত করেও আক্রমণ করেছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
ক্রিস্টি নোম বলেন, হার্ভার্ডকে একটি চিঠি পাঠিয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীর ‘অবৈধ ও সহিংস কার্যকলাপের’ রেকর্ড চাওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি যদি দেখাতে না পারে যে তারা সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সব তথ্য সঠিকভাবে দিচ্ছে ও নিয়ম মানছে, তবে তারা বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার সুবিধা হারাবে। এ ছাড়া হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মোট ২৭ লাখ ডলারের দুটি অনুদান বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হার্ভার্ডের একজন মুখপাত্র জানান, বিশ্ববিদ্যালয় নোমের অনুদান বাতিল ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত চিঠির বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে। এ সপ্তাহের শুরুতে হার্ভার্ডের দেওয়া বিবৃতিতেই তারা স্থির থাকতে চান। সেখানে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেদের স্বাধীনতা, আত্মসমর্পণ বা সাংবিধানিক অধিকার ত্যাগ করবে না। তবে তারা আইন মেনে চলার কথাও জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ কার্যক্রম জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং এগুলোর সঙ্গে ‘ইহুদিবিদ্বেষ ও হামাস-সমর্থন’ জড়িত। যদিও আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেক ইহুদিও রয়েছেন। তারা বলছেন, তারা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, যা কোনোভাবেই চরম পন্থা বা সন্ত্রাসবাদের সমর্থন নয়।
এর আগে হার্ভার্ডকে একগুচ্ছ দাবির একটি তালিকা পাঠায় হোয়াইট হাউস। এর মধ্যে পরিচালনা পদ্ধতির পরিবর্তন, লোকবল নিয়োগ পদ্ধতি ও ভর্তি প্রক্রিয়ার মতো বিষয়গুলো ছিল। গত সোমবার সেটি প্রত্যাখ্যান করে হার্ভার্ড বলেছে, হোয়াইট হাউস তাদের ‘নিয়ন্ত্রণে’ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এরপরই হার্ভার্ডের ২২৬ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেন ট্রাম্প। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির করছাড় সুবিধা বাতিলের হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বুধবার ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, হার্ভার্ড হাস্যকর একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে ঘৃণা ও বোকামি শেখানো হয়। তারা ফেডারেল অর্থ সহায়তার যোগ্য নয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।