তিন চিকিৎসকের স্মরণসভা: আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেন আলোচকেরা
Published: 18th, April 2025 GMT
দেশের স্বাস্থ্য খাতের তিন উজ্জ্বল নক্ষত্র প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস, শুভাগত চৌধুরী ও টি এ চৌধুরী মানুষের কল্যাণের জন্য এবং জনগণের কথা চিন্তা করে কাজ করেছেন। তাঁদের আদর্শ ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আজ শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই তিন চিকিৎসককে নিয়ে এক স্মরণসভায় এসব কথা উঠে আসে। বিশিষ্ট স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ টি এ চৌধুরী (এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী), বিশিষ্ট লেখক ও চিকিৎসক শুভাগত চৌধুরী এবং রাজশাহী ক্যানসার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও রোটারিয়ান প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসকে নিয়ে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই তিন চিকিৎসকই মৃত্যুবরণ করেছেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম। সহযোগিতায় ছিল ওয়ার্ল্ড ক্যানসার সোসাইটি। সভায় চিকিৎসক ও তাঁদের শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই তিন গুণী চিকিৎসকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে জানিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘তাঁরা তিনজনই শিক্ষক, পরামর্শক ও দেশের রত্ন। তাঁদের যে অসমাপ্ত কাজ রয়েছে, সেগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাঁরা লিখতেন। অপ্রকাশিত ও ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা লেখাগুলো একত্র করে তা সামনে আনতে হবে। তাহলেই তাঁদের স্মরণ করা হবে এবং চিন্তাগুলো সবার মাঝে থাকবে।’
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ও অধ্যাপক হালিদা হানুম আখতার বলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়া যেত। তাঁদের কাজ থেকে শিখতে হবে, কীভাবে তরুণদের উৎসাহিত করতে হয়। তাঁরা হারিয়ে যাননি, তাঁদের নিজেদের কাজের ভেতরে ধারণ করতে হবে।’
টি এ চৌধুরী সম্পর্কে বলতে গিয়ে অধ্যাপক সারিয়া তাসনিম বলেন, ‘তিনি গুরুজনেরও গুরু ছিলেন। তাঁর মতো এমন কর্মঠ ও অর্থবহ জীবন সবাই পায় না। তাঁকে স্মরণ করার পাশাপাশি তাঁর আদর্শ মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।’
শুভাগত চৌধুরীর স্ত্রী কামনা চৌধুরী বলেন, ‘এই তিনজনই সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন।’ প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের মেয়ে ইপ্সিতা বিশ্বাসও সবার কাজের মাধ্যমেই তাঁর বাবা বেঁচে থাকবেন বলে জানান।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিটের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই মানুষগুলো অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। তাঁরা আমাদের আরেকটু বড় হতে অনুপ্রেরণা দেন।’
অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কবি মোহন রায়হান, ওয়ার্ল্ড ক্যানসার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পেহেলগামে হামলাকারী তিনজনই পাকিস্তানের নাগরিক বলে আবার দাবি করলেন অমিত শাহ
কাশ্মীরে সেনা অভিযানে নিহতরাই পেহেলগামকাণ্ডের হামলাকারী বলে দাবি করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ মঙ্গলবার লোকসভায় অপারেশন সিঁদুরের ওপর আলোচনার শুরুতেই এই দাবি করে তিনি বলেন, গত সোমবারের অভিযানে নিহত তিনজনই পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
গত সোমবারের ওই অভিযানের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন মহাদেব’। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, নিহতদের ঘাঁটি থেকে পেহেলগামে ব্যবহৃত অস্ত্র পাওয়া গেছে। নিহতদের পরিচয়পত্রও পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা গেছে, ওই তিন জঙ্গি পেহেলগামের হামলাকারী।
গত সোমবার ওই তিন জঙ্গি সরকারি ফৌজের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান। তিনজনের নামও অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা হলেন—সুলেমান, জিবরান ও আফগান।
অমিত শাহ দাবি করেন, পারভেজ নামে যে ব্যক্তি ওই তিন জঙ্গিকে খাদ্য দিয়েছিলেন, তাঁকে আগেই আটক করা হয়েছিল। তিনি ও অন্যরা ওই তিনজনকে শনাক্ত করেছেন। জঙ্গিদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজের নির্দিষ্ট পরীক্ষা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাঁরা পাকিস্তান থেকেই এসেছিলেন।
অমিত শাহ বলেন, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার সময় যে চকলেট তাঁরা খেতেন, তার মোড়ক দেখেও বোঝা গেছে, সেসব পাকিস্তানে তৈরি। জঙ্গিদের ডেরা থেকে পাওয়া ভোটার কার্ডও তাঁদের নাগরিকত্বের পরিচয় দিচ্ছে।
অমিত শাহর দাবি, নিহত জঙ্গি সুলেমান ওরফে হাসিম মুসাই পেহেলগামকাণ্ডের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামের বৈসরণ রিসোর্টে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৫ ভারতীয় ও ১ জন নেপালি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। সবাই ছিলেন পর্যটক। সেই হামলার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। সেই থেকে প্রায় ১০০ দিন অতিবাহিত হলেও এত দিন হামলাকারীদের কোনো খোঁজ মেলেনি। দেশের বিরোধীরা বারবার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতার সমালোচনা করে চলেছেন এত দিন ধরে।
কাকতালীয়ভাবে হামলাকারীদের নিহত হওয়ার দাবি অমিত শাহ সেই দিনই করলেন, যেদিন লোকসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।