প্লাস্টিক বোতল দিয়ে ‘শখের বাড়ি’ নির্মাণ করেছেন আলমগীর হোসেন
Published: 18th, April 2025 GMT
আলমগীর হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি। কাজের সুবাদে দীর্ঘদিন ছিলেন বিদেশ। বছর দেড় আগে দেশে ফিরেছেন। বেশ কয়েকমাস আগে ইউটিউবে একটি ভিডিও চোখে পড়ে তার। ওই ভিডিওতে তিনি দেখেন, ইটের পরিবর্তে কোমল পানীয়ের বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা যায়। ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেও একটি বাড়ি নির্মাণের চিন্তা করেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ভাঙারি দোকান ঘুরে বোতল সংগ্রহ শুরু করেন। কয়েক মাসের চেষ্টায় সংগ্রহ করে ফেলেন প্রায় ২৫ হাজার খালি বোতল। খরচ হয় সাড়ে ১২ হাজার টাকা। এরপর ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে হাত দেন বাড়ি নির্মাণকাজে।
আলমগীর হোসেন বলেন, বাড়িটিতে দুইটি বেড রুম, একটি করে বাথরুম ও টয়লেট আছে। শুরুতে সিমেন্টের পিলার দিয়ে অবকাঠামো তৈরি করা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বোতলে বালু ও মাটি ভর্তি করে সিমেন্ট দিয়ে দেয়ালের গাঁথুনি করা হয়। ওপরে দেওয়া হয়েছে টিনের চাল। বাড়িটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে প্রায় দুই মাস।
খরচ সম্পর্কে তিনি বলেন, সিমেন্ট, বালু, কাঠ, বোতল ও মিস্ত্রির বেতন মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। তবে শুধু ইট-সিমেন্ট দিয়ে বাড়ি তৈরি করলে খরচ পড়তো প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা।
শুক্রবার উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের মধ্য ভাগনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আলমগীর হোসেনের বোতলবাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাড়িটির বাইরের দেয়ালে কোমলপানীয়ের বোতলের পেছনের অংশ আর ঘরের ভেতরের অংশে বোতলের মুখের অংশ রয়েছে। এ সময় বাড়িটি দেখার জন্য কয়েকজন যুবক এখানে আসেন।
বোতলবাড়ি দেখতে আসা মাহফুজুর রহমান বলেন, বাড়িটির কথা আগেই শুনেছিলাম। আজ দেখতে এলাম। প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে অভিনব কায়দায় তৈরি বাড়িটি দেখে অভিভূত হয়েছি। সব কাজ সম্পন্ন হলে আবারও আসব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু তানোরে সেই প্লাস্টিককে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে আলমগীর যে বাড়ি তৈরি করেছেন, তা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলমগ র হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের বকচর এলাকার কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সমিতির নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মোহাম্মদ রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুলকে অপসারণে সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। আজ পদত্যাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নেন তাঁরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কার্যালয়ের ভেতর থেকে ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি সেখানে হামলার চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা তা প্রতিহত করেন এবং একজনকে চাকুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আরিফুল ইসলাম পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতির কাছে জমা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল বের করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর একজন দোসর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের চেয়ারে থাকতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগের কর্মসূচি নেয়। আমরা শুনেছি রিয়াদ পদত্যাগ করেছে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রিয়াদকে পদত্যাগ করানো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। স্বৈরাচারী দোসররা ৫ আগস্টের পর কোনো দপ্তরের চেয়ারে থাকবে না, সেটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্ররা গিয়ে মব সৃষ্টি করে সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় এক যুবক চাকু নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তখন ছাত্ররা তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এরপর সেই যুবককে অস্ত্র আইনের মামলায় বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।